যাত্রাপথে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ভিড়। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
ফরাক্কা ঢুকতেই জনজোয়ারে ভাসলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জোয়ার ভেঙে এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে জঙ্গিপুর পৌঁছুতেই নামল সন্ধ্যে। বার বার কর্মসূচি বদলেও শেষ রক্ষা হল না। তিন জায়গায় দাঁড়িয়ে জন সংযোগের কথা থাকলেও অভিষেককে ৯ জায়গায় দাঁড়াতে হল কর্মীদের চাপে। এমনকি বহু জায়গায় চলন্ত গাড়িতেই বিপদের ঝুঁকি নিয়েও চাপতে হল গাড়ির মাথায়। কখনও দাঁড়ালেন, কখনও বসলেন।
সম্প্রতি এই জেলায় সাগরদিঘি উপনির্বাচনে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছে তৃণমূল। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগও সামনে এসেছে। বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার হয়েছেন। অথচ সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তাই তৃণমূল নেতারা পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতেই ছিলেন। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদকের নবজোয়ার জনসংযোগ যাত্রায় ভিড় দেখে স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের মনেও।
সাগরদিঘির ভোটের পরে সংখ্যালঘুদের সমর্থন তৃণমূল হারাচ্ছে বলে দাবি করেছিল বিরোধী দলগুলি। এ দিন রঞ্জিতপুর আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান অভিষেক ঠিক সন্ধ্যে সাড়ে ৬ টা নাগাদ। সেখানে কয়েক মিনিট বসেন। এখানে প্রায় ২০০ ছাত্র পড়াশুনো করে। তারা দাবি জানায় একটি হোস্টেলের। সাধ্য মতো চেষ্টা করবেন বলে তাঁদের আশ্বাস দেন অভিষেক। এরপর গোলাম মোস্তাফা নামে এক ছাত্র তেলাওয়াত করে শোনান তাকে।জঙ্গিপুরের সাংসদ তথা দলের সভাপতি খলিলুর রহমান বলছেন, “বহুদিন পর এত কাছে পেয়েছে দলের নেতাকে। তাই এই ভিড় স্বাভাবিক। কর্মীরাও খুশি। তবে গলার অবস্থা খারাপ থাকায় কোথাও ভাষণ দিতে পারেননি।”
এ দিন বেলা ২টো ৫৫ মিনিটে অভিষেকের কনভয় যখন ফরাক্কা সেতু পেরিয়ে ফরাক্কার নাকা পয়েন্টে দাঁড়াল তখন তিল ধারণের জায়গা নেই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। গোটা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক জুড়ে ফ্লেক্সে অভিষেকের ছবিতে ছবিতে ছয়লাপ। প্রতিটি ছবির নীচে ‘সৌজন্যে’ কোনও না কোনও নেতার নাম। সে সব নাম কি নজরে পড়ছে অভিষেকের? বাসুদেবপুরেও ভিড় যেন বেসামাল। দলের পতাকায় ছয়লাপ এলাকা। সাজুর মোড় তখন বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের দখলে। একই অবস্থা চাঁদের মোড়েও। রাস্তা ফাঁকা পেলেই অভিষেক গিয়ে ঢুকেছেন গাড়ির মধ্যে। এই ভাবেই জঙ্গিপুরে যখন পৌঁছলেন তখন ৬টা ২৫। দাদাঠাকুরের মূর্তিতে মালা দিলেন। গাড়ি রওনা দিল লালগোলার দিকে। সেখানেই মুর্শিদাবাদে প্রথম রাত কাটাবেন তিনি।