প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলার তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকল— মুর্শিদাবাদের আনাচ কানাচে গুলি-বোমা কিংবা পিটিয়ে খুনের ঘটনায় লাগাম পড়ছে না। বরাত জোরে কেউ কেউ বেঁচে গেলেও রক্তাক্ত হয়েছেন আরও অনেকে।
হামলার ঘটনার পরেই নিয়ম মাফিক তৃণমূলের তরফে আঙুল উঠেছে বিরোধীদের দিকে। স্থান-কাল ভেদে সেই তালিকায় কোথাও জুড়ে গিয়েছে কংগ্রেস কোথাও সিপিএম কোথাও বা বিজেপি-র নেতা-কর্মীদের নাম। তবে, মজার ব্যাপার, পুলিশি তদন্তে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত হিসেবে পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছে তাদের সিংহভাগই তৃণমূলেরই কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত। তৃণমূলের এক জেলা নেতা তাই বলছেন, ‘‘ধরা তো পড়ছে দলেরই লোক, মুখও পুড়ছে। আমাদের সব চেয়ে বড় শত্রু তো আমরাই!’’
সোমবার রাতে নওদার টুঙ্গি এলাকায় তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।হয়েছে তারা তিন জনেই তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। বালি ১ অঞ্চল সভাপতি নিমাই মন্ডল খুন হওয়ার পরেই জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ আবু তাহের খান অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি’র আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এক জোট হয়ে নিমাই মণ্ডলকে খুন করেছে। যদিও ঘটনার পরেই পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছে তারা এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত।
জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘যে কোনও ঘটনায় কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলা তৃণমূলের মুদ্রাদোষ। এই অভ্যাসটা আগে বন্ধ হওয়া উচিত। টুঙ্গির ঘটনাটা নিছকই দ৯লীয় কোন্দলের ফল আর তা ঢাকতেই কামান দাগা হল বিরোধীদের দিকে।’’
এ প্রসঙ্গে বিজেপি’র জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি খুন সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের ফলে নিজেরাই মারামারি করে, খুন হয়। আর নিয়ম করে দোষ চাপানো হয় আমাদের উপরে।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যও প্রায় একই সুরে দাবি করেছেন, ‘‘আমরা খুনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির দুর্নীতির টাকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি চলছেই। তাতেই খুন-জখমের ঘটনা ঘটছে।’’