ধর্নায় বসেছেন নার্সেরা। মুর্শিদাবাদের সালার গ্রামীণ হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার রাতে সালার গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রেজিয়া বিবি তাঁর অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। অভিযোগ, সেই সময় কর্তব্যরত এক নার্সকে সপাটে চড় মারেন তিনি। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ। এক জন জনপ্রতিনিধির এই আচরণে রবিবার সকাল থেকে একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন হাসপাতালের নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের গেটের সামনে ধর্না অবস্থান শুরু হয়। নার্সদের দাবি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত প্রধানকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে ‘আক্রান্ত’ নার্স বলেন, “শনিবার রাতে আমি ডিউটিতে ছিলাম। নিজের মেয়েকে নিয়ে এক মহিলা হাসপাতালে আসেন। মেয়েটিকে ইনজেকশন দিতে আমি পাশের ঘরে ডাকি। কারণ, যে ঘরে মেয়েটি ছিল, সেখানকার আলো মাঝেমাঝে নিভে যায়। নিজেকে সালারের প্রধান বলে দাবি করে ওই ভদ্রমহিলা বলেন, কেন মেয়েকে ইনজেকশন দেওয়ার জন্য অন্য ঘরে নিয়ে যেতে হবে? এর পর আমাদের চাকরি খেয়ে নেবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন তিনি।” একই সঙ্গে অভিযোগকারিণীর সংযোজন, “এরই মধ্যে এক জন পুরুষ এসে অভিযোগ করতে থাকেন, আমরা রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি। ভদ্রমহিলা মারমুখী হয়ে ওঠেন। তখন হাসপাতালের এক জন গ্রুপ ডি কর্মী তাঁকে রোখার চেষ্টা করেন। কিন্তু, তিনি এসে আমার গালে কষিয়ে থাপ্পড় মারেন। আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার নাকের হাড় ভেঙে গিয়েছে।”
এই ঘটনার খবর শুনেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। ভরতপুর ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সরকারি হাসপাতালে নার্সকে যদি এ ভাবে হেনস্থা করা হয়, দল তা বরদাস্ত করবে না।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “কিন্তু, প্রধান এক জন মা-ও বটে। মেয়ের শরীর খারাপ থাকায় তিনি বিচলিত ছিলেন। মা হিসাবে খারাপ আচরণ করে ফেলেছেন। প্রধান যদি দায়িত্বজ্ঞান ভুলে গিয়ে এই কাজ করে ফেলেন, তা হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সবটা জেনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”