—ফাইল চিত্র।
ঠিক দুপুর ১টা বেজে ২৮ মিনিট। ‘পবিত্র মুহূর্তে’ খোলা হল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের দরজা। যে ভান্ডারে দ্বাদশ শতকের পুরনো মন্দিরের ‘বিবিধ রতন’ জমা আছে বলে বিশ্বাস। দীর্ঘ আলোচনা এবং বিতর্ক পেরিয়ে সেই ভান্ডার রবিবার খোলা হল ৪৬ বছর পরে। ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের পরামর্শে। রত্নভান্ডারটির সংরক্ষণের কাজের জন্য।
দ্বাদশ শতকের জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডার নিয়ে নানা রকম কাহিনি চালু আছে। কথিত আছে, ভান্ডারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে জগন্নাথ মন্দিরের বিপুল রত্নরাজির প্রহরায় থাকে সাপেরা! যদিও সেই সব দাবির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আপাতত রবিবার রত্নভান্ডারটির দরজা খোলার পরে তার ভিতরে প্রবেশ করবেন ১১ সদস্যের একটি দল। এর মধ্যে রয়েছেন রত্নভান্ডার নিয়ে গঠিত বিশেষ কমিটির সভাপতি বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ এবং কমিটির সদস্য তথা জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পাধি, পুরীর মহারাজা গজপতির একজন প্রতিনিধি এবং কমিটির বিশিষ্ট সদস্য সিবিকে মোহান্তি। এ ছাড়াও সাপেদের এড়াতে মন্দিরের ভিতরে এবং বাইরে উপস্থিত রয়েছেন স্নেক হেল্পলাইনের দু’টি বিশেষজ্ঞ দল। তবে মন্দির সূত্রে খবর, রবিবার রত্নভান্ডারের ভিতর থেকে কোনও সম্পদ বাইরে আনার কাজ হবে না। রবিবার শুধুই রত্নভান্ডারের ভিতরের অংশটি ঘুরে দেখবে ১১ সদস্যের দলটি।
এই রত্নভাণ্ডারের দু’টি প্রকোষ্ঠ রয়েছে। একটি বাইরের প্রকোষ্ঠ অন্যটি ভিতরের। রবিবার দুপুর পর্যন্ত বাইরের প্রকোষ্ঠ থেকে কিছু গহনা সম্বলিত বাক্স বার করে আনা হয়েছে মন্দিরে। তবে ভিতরের প্রকোষ্ঠটি দুপুর পর্যন্ত খোলা যায়নি। সেটি খোলার চেষ্টা চলছে।
রবিবার রত্নভান্ডারের দরজা খোলার পরে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে এই কাজের সাফল্য কামনা করেছেন ওড়িশার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। তাঁর দফতরের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘হে জগন্নাথ, তোমার ইচ্ছেতেই এই মন্দিরের চারটি দরজা খুলেছিল। আবার তোমারই ইচ্ছেতে ৪৬ বছর পরে মন্দিরের রত্নভান্ডারের দরজাও অবারিত হল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই মহৎ কাজ সফল হবে।’’
পুরীর জগন্নাথ মন্দির সূত্রে খবর, রত্নভান্ডারের সম্পদ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিশেষ ‘ভল্টে’। তার জন্য রবিবার রত্নভান্ডারের দরজা খোলার আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছে ৬টি বড় সিন্দুক। সূত্রের খবর, প্রথমে রত্নভান্ডারের থাকা ধনরাশির অডিট করা হবে। তার পরে তা পাঠানো হবে সুরক্ষিত ভল্টে।
রত্নভান্ডারে দরজা খোলা এবং তা সংরক্ষণের প্রক্রিয়ার জন্য যে উচ্চস্তরীয় কমিটি তৈরি করা হয়েছিল, তারাই এ কাজের জন্য একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ তৈরি করে দিয়েছে। যাতে অনুমোদন দিয়েছে ওড়িশার নবগঠিত সরকার। সেই অনুমোদিত প্রক্রিয়া মেনেই হবে রত্নভান্ডার সংক্রান্ত যাবতীয় সংস্কারের কাজ।