তৃণমূলে যোগদান কর্মসূচি
Murshidabad

নয়া মুখ না পুরনো কর্মী, টিপ্পনী আর হুঙ্কার চলছেই

বিজেপির টিপ্পনী— আসলে বসে যাওয়া কর্মীদের দলে ফিরিয়ে নিজেরাই নিজেদের হাততালি কুড়োচ্ছে তৃণমূল।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০১:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রচারটা কখনও সোচ্চারে কখনও বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিঃশব্দে, তৃণমূলের দলীয় সমাবেশ। যার মঞ্চ জুড়ে থাকছে দলের প্রায় হারানো মুখের ভিড় কিংবা বিরোধী শিবির থেকে আসা কিছু নয়া মুখের অস্বস্তি নিয়ে অপেক্ষা।

Advertisement

ভোটকুশলী পিকে’র নির্দেশে বিধানসভা নির্বাচনের আগে, আকারে প্রকারে দলের বাড়বৃদ্ধি এবং প্রচ্ছন্ন ভাবে বিরোধী ভাঙানোর এই পুরনো খেলা, যা দলের নেতাদের কথায়, ‘তৃণমূলে যোগদান পর্ব।’ জেলা জুড়ে দলের ছোট-মেজ নেতারাও এখন সাড়ম্বরে যোগদান শিবির করে দলে নম্বর বাড়াতে চাইছেন, এমনই মনে করছেন বিরোধীরা। তাঁদের টিপ্পনী— দলে নতুন মুখ যোগ কোথায়? আসলে বসে যাওয়া কর্মীদের দলে ফিরিয়ে নিজেরাই নিজেদের হাততালি কুড়োচ্ছে তৃণমূল। যা শুনে মুচকি হেসে সদ্য নিযুক্ত তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর সৌমিক হোসেন বলছেন, ‘‘এ সবই হল বিরোধীদের গাত্রদাহ। দল ভেঙে পড়ছে তো তাই সহ্য হচ্ছে না।’’

তবে, তৃণমূলে যোগদান কর্মসূচির বিরাম নেই। পুরনো আর নতুন নিয়ে বিতর্ক যাই থাক, তৃণমূলের এমন যোগদান কর্মসূচির কিন্তু বিরাম নেই মুর্শিদাবাদে। বহরমপুর থেকে কান্দি, ফরাক্কা থেকে রানিনগর—নাগাড়ে তা চলেছে।

Advertisement

সাড়ম্বরে সেই অনুষ্ঠান দেখে দলেরই এক প্রবীণ নেতা বলছেন, ‘‘এটা আসলে তৃণমূলের বসে যাওয়া কর্মীদের হাতে পতাকা তুলে দেওয়া। তাঁদের সক্রিয় করা। অন্য দলের কেউ যে একেবারে যোগ দিচ্ছেন না এমন নয়। তবে তাঁরা সংক্যায় কম। তা ছাড়া দল ভাঙানোর কেলায় যিনি পাকা খেলোয়াড় ছিলেন তাঁরই তো এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। দল আর ভাঙাবে কে!’’ ইঙ্গিতটা যে সদ্য-প্রাক্তন জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকতারীর দিকে, বলাই বাহুল্য। বছর তিনেক আগে তাঁর হাত ধরেই যে কংগ্রেসের গড় মুর্শিদাবাদ থেকে দলের সাংসদ-বিধায়ক-পুর প্রতিনিধিরা কাতারে কাতারে ভিড়েছিলেন তৃণমূলে তা সকলেই জানেন, ফলে কর্মীরা সে যুক্তিকে একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না।

শাসক দলের এই তৃণমূলে যোগদান কর্মসূচিকে তাই কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বামেরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জামির মোল্লা বলছেন, ‘‘তৃণমূল এখন ফুটো নৌকায়। সেই নৌকায় কেউ উঠতে চাইছেন না। দলে যাঁরা রাগ করে বসেছিলেন তাঁদের হাতে এখন দলীয় পতাকা ধরাতে হচ্ছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষের কথায়, ‘‘এ তো নিছক দলনেত্রীকে খুশি করতে তৃণমূলের নব নিযুক্ত কো-অর্ডিনেটরেরা যোগদান কর্মসূচির নামে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছেন। আদতে এটা একটা নির্বাচনী কৌশল।’’

আর এক ধাপ এগিয়ে জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলছেন, ‘‘ভোট কুশলী পিকে’র নির্দেশে তৃণমূল জেলাজুড়ে ভুয়ো যোগদান কর্মসূচি করছে বটে, তবে জেনে রাখবেন, এটা আদতে ধাপ্পাবাজি!’’

জেলা তৃণমূলের আর এক কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস পাল্টা হুঙ্কার ছাড়ছেন, ‘‘ভুয়ো না সত্যি সেটা না হয় নিবার্চনের সময়েই দেখা যাবে, কে কোন দলের মিছিলে হাঁটছে দেখলেই বুঝতে পারবেন। ফল বেরলো তা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement