TMC MLA

‘জয় হোক বামপন্থী পরিবেশের’, আচমকা বামেদের সভায় এসে বললেন তৃণমূল বিধায়ক

বৃহস্পতিবার নবদ্বীপ-মায়াপুরের বামনপুকুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নবনির্বাচিত বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে ‘শপথগ্রহণ’ সভার আয়োজন করেছিল বামেরা। সেই সভায় হাজির হন বিধায়ক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ১৯:৪০
Share:

বামেদের সভায় বক্তৃতা করছেন তৃণমূল বিধায়ক। —নিজস্ব চিত্র।

লাল পতাকায় মোড়া সভা চত্বর। মঞ্চ তৈরি লাল-সাদা কাপড়ে। তার সামনে বসার আসনে অপেক্ষারত শ’দুয়েক বাম কর্মী-সমর্থক। মঞ্চে থাকা বাম নেতারাও একে একে উঠে এসে সবে বক্তৃতা করতে শুরু করেছেন। এমন সময় মঞ্চের ঠিক পাশের রাস্তায় একটা সাদা বিলাসবহুল গাড়ি এসে থামল। বামেদের সভায় বিলাসবহুল গাড়ি দেখে অনেকেই চোখ চাওয়াচাওয়ি শুরু করেছেন। তত ক্ষণে গাড়ি থেকে সটান নেমে বামেদের সভামঞ্চে উঠে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ওরফে নন্দ। এই দৃশ্য দেখে সাধারণ বাম কর্মী-সমর্থকেরা তো বটেই, বাম নেতাদেরও চোখ তখন ছানাবড়া! সে সবের ভ্রুক্ষেপ না করে মঞ্চে উঠে বিধায়ক নিজেই চেয়ার টেনে বসলেন। খানিকটা ধাতস্থ হতেই এগিয়ে এলেন কয়েক জন বাম নেতা। নন্দকে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান তাঁরা। এর পরেই মাইক টেনে বামেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিধায়ক। তা শুনেই হাততালির ঝড় সভামঞ্চ জুড়ে। রাজনৈতিক সৌজন্যের এমনই দৃশ্য দেখল নদিয়ার নবদ্বীপের বামনপুকুর।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, নবদ্বীপের পাঁচ বারের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ এমনিতে অসুস্থ। তা সত্ত্বেও নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু যে বামেদের বিরুদ্ধে এত বছর লড়াই করেছেন, তাদের মঞ্চে তাঁর উপস্থিতিতে ‘অভিভূত’ শাসকদলও। বৃহস্পতিবার নবদ্বীপ-মায়াপুরের বামনপুকুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নবনির্বাচিত বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে ‘শপথগ্রহণ’ সভার আয়োজন করেছিল বামেরা। সেই সভায় হাজির হয়ে বিধায়ক বলেন, ‘‘মানুষ তৈরির দিনে আমরা অমানুষ হব না। আমরা গাধার মতো পড়ে থাকব না। প্রকৃত মানুষের মতো আমরা আন্তরিক হয়ে উঠব। বামুনপুকুর মায়াপুরের বামপন্থী দাদাভাই ও বন্ধুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি। জয় হোক বামপন্থী পরিবেশের, জয় হোক মানবিক পরিবেশের। সম্প্রীতি-মানবিকতার এই পরিবেশকে আমরা শ্রদ্ধা করি। প্রত্যেকটা মানুষকে ব্যক্তিগত ও দলগত ভাবে আমি শ্রদ্ধা করি।’’

দলীয় সভায় শাসকদলের বিধায়কের আসা নিয়ে সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে আমন্ত্রণ জানাইনি। উনি কেন এসেছেন, উনিই বলতে পারবেন। উনি আসার পর আমরা অশ্রদ্ধা করিনি। উনি বামেদের সম্পর্কে ঢালাও প্রশংসা করেছেন। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তাই অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিও আমাদের রাজনৈতিক সৌজন্য আছে।’’

Advertisement

এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে আঁতাঁতের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে তারা। দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূল ও সিপিএম তো অনেক জায়গায় বোর্ড গঠন করছে। কেন্দ্রে জোট করেছে, লোকসভা ভোটের আগে মহড়া দিচ্ছেন নন্দবাবু।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement