সত্যেনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। — নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ভরদুপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তৃণমূল নেতা তথা জেলার সাধারণ সম্পাদক সত্যেন চৌধুরীর। একদা অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন সত্যেন। কিন্তু পরবর্তী কালে যোগ দেন তৃণমূলে। তবে ইদানীং রাজনীতি থেকে দূরত্ব বাড়ছিল সত্যেনের। রবিবার দুপুরে তাঁকে দুষ্কৃতীরা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করে।
সূত্রের খবর, বহরমপুরের ভাকুড়ি মোড়ে বেশ কয়েক জন অনুগামীকে নিয়ে নির্মীয়মান বহুতলের কাছে বসেছিলেন সত্যেন। সেই সময় দু’টি বাইকে করে তিন দুষ্কৃতী সত্যেনকে ঘিরে ধরে। খুব কাছ থেকে পর পর তিন রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলির শব্দে আশপাশ থেকে স্থানীয়রা ছুটে এসে রক্তাক্ত সত্যেনকে উদ্ধার করেন। তড়িঘড়ি তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় সত্যেনের।
স্থানীয়দের দাবি, প্রথম দিকে রাজনীতিগত ভাবে অধীর-ঘনিষ্ঠ ছিলেন সত্যেন। সুতিরমাঠ সেবা সমিতি-সহ একাধিক ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ ছিল সত্যেনেরই হাতে। বাম আমলে বেশ কয়েক বার বিভিন্ন অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে জেল খেটেছেন সত্যেন। রাজ্যে পালাবদলের পর অধীরের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে তৃণমূলে যোগ দেন সত্যেন। প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা সত্যেনকে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়। যদিও গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে সে ভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি সত্যেনকে। সত্যেনের খুনের নেপথ্যে রাজনীতি নাকি ব্যবসায়িক কোনও বিষয় রয়েছে, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, ‘‘কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লোকসভা ভোটের আগে অশান্তি তৈরি করতে সত্যেনকে খুন করেছে।’’ বামেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে মুর্শিদাবাদ জেলার সিপিএম সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘‘নিজেদের বখরা ভাগাভাগির জেরে খুন হতে হচ্ছে তৃণমূল নেতাদের। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই খুন হয়েছেন তৃণমূল নেতা।’’ মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে থেকে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।’’