—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
তৃণমূল নেতাকে খুন করার ঘটনার দু'বছর দু'মাস পরে ঘটনায় জড়িত চার অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা দিল কান্দি আদালত। বুধবার কান্দি আদালতে ওই সাজা ঘোষণা করেন আদালতের দ্বিতীয় দ্রুত নিস্পতির আদালতের বিচারক অরবিন্দ দত্ত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাতে কান্দি থানার দুর্গাপুর গ্রামের নিজের রেশন দোকান থেকে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দোকান থেকে মাত্র দু'শো মিটার দূরত্বের মধ্যে চার জন মিলে আন্দুলিয়া অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি নেপাল সাহাকে (৫২) প্রথমে গুলি করে, কিন্তু গুলি না লাগায় মোটরবাইক থেকে নামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে।
পরের দিন মৃতের স্ত্রী যমুনা সাহা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে থানায় অভিযোগ করেন কান্দি থানার রূপপুরের বাসিন্দা সপ্তম ঘোষ, ররুণ ঘোষ, তারকনাথ সাহা ও বিষ্ণু দলুইয়ের নামে। পুলিশ ১২ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া থানার আম্বিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকে বিচারাধীন বন্দি ছিলেন অভিযুক্তরা। ওই ঘটনার পর কান্দি আদালতে ২২ জনের সাক্ষী গ্রহণের পর মঙ্গলবার চার জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। এদিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সাজা ঘোষণা করার সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দু'বছর জেলের নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একত্রিত হয়ে অপরাধ মূলক কাজ করার জন্য সাত বছর জেল, ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস জেল, আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অপরাধে তিন বছর জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস জেলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক অরবিন্দ দত্ত। আদালতের সাজা ঘোষণা হওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন অভিযুক্তদের আত্মীয়রা। অন্যদিকে সাজা ঘোষণা হওয়ার পর কিছুটা হলেও খুশি নেপাল সাহার পরিবারের লোকজন। মৃতের ভাইপো রাজু সাহা বলেন, ‘‘ওরা যে ভাবে আমার কাকাকে খুন করেছে ওদের ফাঁসির সাজা হবে ভেবেছিলাম। তবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে এতেও আমরা খুশি।’’ সরকার পক্ষের আইনজীবী সুনীল চক্রবর্তী ও সুকান্ত মুখোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘ঘটনার পর থেকে পুলিশ যে দ্রুততার সঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা থেকে সমস্ত প্রমাণের ব্যবস্থা করে তাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাজা ঘোষণা হয়েছে। এমন সাজা ঘোষণা হওয়ার কারণে এমন ধরনের অপরাধ মূলক কাজ কমবে।" তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের সাজা ঘোষণা হওয়ার পর দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘নেপালের স্ত্রী পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। নেপালও দলে নেতৃত্ব দিয়েছে। এমন সাজায় আইনের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়ে যাবে।’’