— প্রতীকী চিত্র।
গরু গিয়ে পিঠ চুলকেছিল গাছে। কে জানত, ওই গাছেই রয়েছে মৌমাছির চাক! গরুর পিঠ চুলকানির ধাক্কায় গাছ নড়ে উঠতেই ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি গিয়ে আক্রমণ করে গরুকে। গরু বাঁচাতে ছুটেছিলেন তৃণমূল নেতা মালিক। গরুর পাশপাশি মৌমাছি হামলা করে তাঁর উপরও। আর তাতেই মৃত্যু হল গরুর মালিক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী গুরুদাস টিকাদারের। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার করিমপুর থানা এলাকার জয়নাবাদ গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, করিমপুর থানা এলাকার জয়নাবাদ গ্রামে গুরুদাস ঠিকাদারের বাড়ির গোয়াল থেকে একটা গরু বাড়ির পিছনের জঙ্গলে চলে গিয়েছিল। গরু ধরতে পিছন পিছন ছুটেছিলেন গুরুদাস। জঙ্গলের মধ্যে একটি গাছে মৌমাছির বড় চাক ছিল। গরুটি ওই গাছে ধাক্কা মারলে মৌমাছির দল উড়ে এসে প্রথমে গরুটিকে ছেঁকে ধরে। গরু বাঁচাতে সে দিকে ছুটে যান গুরুদাস। সেই সময়ে মুখে ও মাথায় শ’দুয়েক মৌমাছি হুল ফুটিয়ে দেয়। তারস্বরে চিৎকার করতে থাকেন গুরুদাস। চিৎকার শুনে ছুটে এসে গামছা দিয়ে একটা একটা করে মৌমাছির হুল বার করেন পরিবারের লোকজন । তার পর তাঁকে তেহট্টের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তত ক্ষণে মৃত্যু হয়েছে প্রাক্তন সেনাকর্মীর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মৌমাছিগুলি আকারে বেশ বড়। শরীরে কালো রঙের উপস্থিতি বেশি, সামান্য হলদেটে ছোপও রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, সচরাচর এই ধরনের মৌমাছি এলাকায় দেখা যায় না।
গুরুদাসের ছেলে সৌরভ বলেন, ‘‘বাবা বছর দশেক আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিলেও নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিলেন। সামান্য মৌমাছির কামড়ে বাবার মৃত্যু হল, এটা ভাবতেই পারছি না।’’
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ শান্তনু ঝা বলেন, ‘‘বিবরণ শুনে মনে হচ্ছে ওখানে ‘এপিস ডরসাটা’ মৌমাছির চাক ছিল। শত্রুর আক্রমণ বুঝতে পারলে ওরা দলবেঁধে দ্রুত আক্রমণ করে। একটি মৌমাছির হুলের বিষ সামান্য হলেও অনেক মৌমাছি একসঙ্গে কামড়েছে বলে সম্মিলিত বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে ওই ব্যক্তির।’’