দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফর করে গেলেন। সেখানে জনসংযোগ যাত্রা, নবজোয়ার কর্মসূচি ঘিরে উন্মাদনা ছিল। তবে, তাঁর সামনেই ভোটাভুটিতে প্রার্থী নির্বাচন ঘিরে বিশৃঙ্খলাও দেখা গেল। দলের নিচুতলার কর্মীদের বক্তব্য, একে তো সাধারণ সম্পাদকের সামনে মুখ পুড়লো, তার উপরে নতুন করে ভোটাভুটিতেও দ্বন্দ্ব যে মিটেছে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। বিরোধীরা সে ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পেয়ে যেতে পারে।
তৃণমূল সূত্রে দাবি, বেলডাঙা ১ ব্লক (উত্তর) তৃণমূল সভাপতি নিজের মতো কমিটি তৈরি করেছেন। দাবি, তাঁর সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরোধও প্রকাশ্যে এসেছে। পঞ্চায়েত স্তর থেকে কোনও প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তৃণমূলের একটা সূত্র জানাচ্ছে সেখানে ৩৩ জনের কমিটি হয়েছে, সকলেই সভাপতির অনুগত। সংগঠনকে কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি দলে যে ভোটাভুটি হল, সেখানেও ঠিক ব্যক্তিকে নির্বাচন করা হয়নি বলেও ক্ষোভ দলে। চৈতন্যপুর ২ পঞ্চায়েতের একটা অংশ জানাচ্ছে, রাতারাতি কমিটি বদল করা হয়েছে। তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, দল কী ভাবে অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করে সেটা দেখা যাবে।
ওই ব্লকের সহ সভাপতি তৃণমূলের উজ্জ্বল গায়েন বলেন, ‘‘দলে বিভাজন পরিষ্কার। এতে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফল খারাপ হতে পারে, সেটা নিয়ে দলের ভাবা উচিত। এর উত্তর আমরা দিতে পারব না।’’ যদিও বেলডাঙা ১ ব্লক (উত্তর) সভাপতি তৃণমূলের বনতোষ ঘোষ বলেন, ‘‘অঞ্চল কমিটি ও ব্লক কমিটি ঠিক পদ্ধতি মেনেই তৈরি হয়েছে। তবে সকলেই প্রার্থী হতে চাইলে হবে না। সকলে ভোট দিতে চাইলে হবে না। দল ঠিক ভাবেই চলছে।’’ বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
রেজিনগর বিধানসভা এলাকায় একই অবস্থা। বিধায়ক ও সভাপতির প্রকাশ্য বিরোধ। সেখানে বেলডাঙা ২ ব্লকের রামপাড়া ২ পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত স্তরে কারা প্রার্থী হবেন, তা বাছাই ঘিরে পুরনো দ্বন্দ্বে ঝামেলার সূত্রপাত। তৃণমূল সূত্রে দাবি, সেই বিরোধ মিটছে না। আগে রেজিনগরের বিধায়কের সঙ্গে বেলডাঙা ২ (পূর্ব) তৃণমূলের সভাপতিকে দেখা যেত। এখন সভাপতিকে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে বলে দাবি।
এই নিয়ে সমাজ মাধ্যমে বিভিন্ন মন্তব্য দেখা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বেলডাঙা ২ (পূর্ব) তৃণমূলের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, ‘‘সকলেই তৃণমূলের বিধায়ক। ফলে সকলেই সঙ্গেই থাকতে হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দলে কোনও সমস্যা নেই।’’ বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘সব সমস্যা মিটে গিয়েছে। তা ছাড়া অন্য কিছু বলার নেই।’’