ভোটের রেসিপি

মন পড়তে পা পড়ল হেঁশেলে

মহিলা সেলকে সক্রিয় করে  ভোটের মুখে কংগ্রেস-সিপিএম’কে বড় চ্যালেঞ্জের সামনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছেন দলীয় নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:০৭
Share:

তৃণমূলের মহিলা কর্মীদের সভা। নিজস্ব চিত্র

পুরভোটোর মুখে মহিলা কর্মীদের গেরস্ত বাড়ির অন্দরে পাঠানোর কর্মসূচি নিল জেলা তৃণমূল।

Advertisement

আর, হেঁশেলে দলের প্রভাব বাড়াতে ওয়ার্ড পিছু মহিলা তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে ৫টি দলও করা হয়েছে। দলে সদস্য সংখ্যা পাঁচ। তাঁরা অন্দরমহলে তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরবেন এমনই আশা জেলা তৃণমূল নেতাদের।

জেলা তৃণমূলের এক তাবড় নেতা বলছেন, ‘‘শুধু উন্নয়নের খতিয়ান কেন, বাড়ির অভাব-অভিযোগ থাকলেও তার নাড়ি নক্ষত্র জেনে আসার নির্দেশ রয়েছে মহিলা কর্মীদের উপরে।’’

Advertisement

মহিলা সেলকে সক্রিয় করে ভোটের মুখে কংগ্রেস-সিপিএম’কে বড় চ্যালেঞ্জের সামনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলেই মনে করছেন দলীয় নেতারা।

জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী শাহনাজ বেগম বলছেন, ‘‘অর্ধেক ভোটার মহিলা। পুরভোটের আগে আমরা তাঁদের কাছে পৌঁছতে চাইছি। সংগঠনের পক্ষ থেকে কমিটি গড়ে প্রতিটি বাড়িতে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে। মহিলা কর্মীরা অনায়াসে বাড়ি অন্দরে, হেঁশেলে পৌঁছতে পারবেন। আমাদের সরকার মহিলাদের জন্য যে সব কাজ করেছে, তার খতিয়ান দেওয়ার পাশাপাশি পাড়া-পড়শির অনুযোগও কুড়িয়ে নিয়ে আসছেন। আমরা সেই মতো তার প্রতিকারের চেষ্টা করব।’’

জেলার সব ক’টি পুরসভা শাসকদলের দখলে থাকলেও, গত লোকসভা ভোটের ফল অনুযায়ী ধুলিয়ান, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, কান্দি ও বহরমপুর পুরসভায় পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ পুরসভায় বিজেপি, ধুলিয়ান, বহরমপুর ও কান্দিতে কংগ্রেস এগিয়ে ছিল। ব্যতিক্রম জঙ্গিপুর, বেলডাঙা ও ডোমকল পুরসভা। ফলে আসন্ন পুর নির্বাচন শাসকদলের কাছে জেলার পুর বোর্ডগুলি পূণরায় দখল করা বড় চ্যালেঞ্জ। এক কদম এগিয়ে তাই মহিলা ব্রিগেড দিয়েই প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল।

দলের অন্দরের খবর, মহিলা তৃণমূল গত ডিসেম্বরে পুর নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার সব ক’টি পুরসভায় মহিলাদের নিয়ে সম্মেলন সেরে রেখেছে ইতিমধ্যেই। সেই সম্মেলনে মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পুর ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়ে তাতিয়ে দিয়ে গিয়েছেন মহিলা কর্মীদের। মহিলা তৃণমূলের এক নেত্রী বলছেন, ‘‘বাড়ির অন্দরে পুরুষ কর্মীরা ততটা যেতে পারেন না। কিন্তু একজন মহিলা কর্মী সহজেই বাড়ির হেঁশেলে ঢুকতে পারেন। তাই আমাদের বাড়ির অন্দরে ঢুকে মনের খবর পাওয়া সহজ। সে কাজটাই করতে চাইছি মানুষের মন পেতে।’’

পিছিয়ে নেই মহিলা কংগ্রেসও। বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় অধীর চৌধুরী সভাও করেছেন। মহিলা কংগ্রেসও বিভিন্ন ওয়ার্ডে ছোট ছোট বৈঠক শুরু করেছে। বহরমপুর শহর মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী টুম্পা সরকার বলছেন, ‘‘ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমরা কর্মী-বৈঠক শুরু করেছি। মার্চের প্রথম সপ্তাহে শহর মহিলা কংগ্রেসের সম্মেলন রয়েছে।’’ সিপিএমের মহিলা সংগঠন অবশ্য এখনও আলাদা কোনও কর্মসূচি নেয়নি। সিপিএমের মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রী সুলেখা চৌধুরী বলছেন, ‘‘আমরা সব সময় মানুষের সমস্যা নিয়ে লড়াই করি। এখনও করছি। আলাদা করে ঘরের অন্দরে মেয়েদের পাঠিয়ে মন জয় করার অভিপ্রায় আমাদের নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement