প্রমথরঞ্জন বসু। নিজস্ব চিত্র।
এক প্রবীণ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ আনলেন তাঁর পুত্রবধূ। অভিযুক্ত নেতার নাম প্রমথরঞ্জন বসু। তিনি রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি। নদিয়ার পরিচিত তৃণমূল নেতা। প্রমথরঞ্জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় হাঁসখালি থানায় এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টার পাশাপাশি পণ চেয়ে বধূ নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল নেতার বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে আনা ওই অভিযোগ সত্য নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত তাঁর সম্মান নষ্ট করতেই কেউ পরিকল্পনা করে এ কাজ করেছেন। ঘটনাটিকে ‘বিজেপির চক্রান্ত’ বলেও মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেতা।
গত ২৩ মে-র ঘটনা। প্রমথরঞ্জনের পুত্রবধূর অভিযোগ, পণের জন্য তাঁকে নিয়মিত নির্যাতন করা হত শ্বশুরবাড়িতে। ওই দিন তিনি যখন নিজের ঘরে শুয়েছিলেন, তখন আচমকাই তাঁর শ্বশুরমশাই এসে তাঁর মুখ চেপে ধরেন। তবে ওই নেতার বউমা জানিয়েছেন, তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হলেও সেই চেষ্টা সফল হয়নি। কারণ তিনি ওই সময় ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন।
পুলিশকে ওই নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ১০ বছরে আগে তৃণমূল নেতার ছেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তার পর থেকে নিয়মিত পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। এক সময় সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিচ্ছেদের কথাও ভেবেছিলেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। বরং বিচ্ছেদের বিষয়ে যখন তাঁর শ্বশুরবাড়িতে জানতে পারে, তখন অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে নিজের বাড়ি ফিরে আসেন প্রমথরঞ্জনের বউমা। তাঁকে বুঝিয়ে ফের শ্বশুরবাড়ি নিয়ে আসেন তৃণমূল নেতার ছেলে। এর পরও নির্যাতন চলছিল। তার পরই আচমকা শ্বশুরমশাইয়ের হাতে আক্রান্ত হন তিনি।
তৃণমূল নেতা অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। পুত্রবধূকে ‘ওই মহিলা’ বলে সম্বোধন করে তিনি বলেন, ‘‘ওর ডিভোর্সের মামলা চলছে। ওর পরিবার বিজেপি করে। আমার রাজনৈতিক জীবনকে কালিমালিপ্ত করতে এই চক্রান্ত।’’
তৃণমূল নেতার নামে অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপি সংসদ জগন্নাথ সরকার পাল্টা বলেন, ‘‘এই ঘটনা আবার স্পষ্ট করে দিচ্ছে, তৃণমূল নেতাদের হাতে মা-বোনেরা সুরক্ষিত নয়। সন্তানসমা বৌমার যদি এই অবস্থা হয়, তবে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন।’’
উল্লেখ্য, এই হাঁসখালিতেই কয়েক মাস আগে এক তৃণমূল নেতা এবং তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। রানাঘাট মহকুমা আদালতে তৃণমূল নেতার পুত্রবধূর গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।