হাসপাতালে ফিরোজ। —নিজস্ব চিত্র।
লাঠি, রড দিয়ে মেরে জঙ্গিপুরের এক তৃণমূল প্রার্থীর হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে। জয়রামপুরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ফিরোজ শেখকে মারধর করা হচ্ছে শুনে ছুটে এসেছিলেন তাঁর বাবা-কাকাও। অভিযোগ, মারমুখী ওই সিপিএম কর্মীদের হাত থেকে রেহাই পাননি তাঁরাও। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাল্টা অভিযোগ এনেছে। দু’পক্ষই থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ।’’
ঘটনাটি ঠিক কী?
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই পরিবার আগে সিপিএমের সমর্থক ছিল। যে ওয়ার্ডটিতে গোলমাল, সেই ১ নম্বর ওয়ার্ডটি বহু দিন ধরেই সিপিএমের দখলে রয়েছে। এ বারের ভোটে জিততে সিপিএমের সমর্থক পরিবারের ছেলে তথা দুর্গাপুরের এক মেকানিক্যাল ইজ্ঞিনিয়ারিংয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র ফিরোজকে পুরভোটের টিকিট দেয় তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম যখন ক্ষমতায় ছিল তখন এলাকার কোনও উন্নয়ন করেনি। এখন ভোট হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে দেখে খেপে গিয়ে সিপিএমের লোকেরা ফিরোজের পরিবারের উপরে নৃশংস আক্রমণ চালিয়েছে।
ফিরোজের বাবা রাকিম শেখও বলেন, ‘‘এ বারের পুরভোটে জয়রামপুরের একটা বড় অংশ আমাদের সমর্থন করছে। এলাকায় ভাল সাড়া পাচ্ছি। বাম ভোট হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়েই সিপিএম পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে।’’ ফিরোজ বলেন, ‘‘রবিবার রাতে ভোটের প্রচার সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। তখন এলাকার এক সিপিএম নেতার নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড নিয়ে চড়াও হয়। হুমকি দেয়, ভোটের প্রচার করা যাবে না। প্রতিবাদ করতেই বেধড়ক মারধর করে। আমাকে বাঁচাতে এসে বাবা-কাকাও প্রহৃত হয়েছেন।’’ তিন জনেই জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হুমকি, মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সাহাদাত হোসেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রবিবার রাতে ফিরোজ ও তৃণমূল সমর্থকরা দলের সদস্য এক্রামুল হকের বাড়িতে চড়াও হয়েছিল। এক্রামূলের পরিবার তার প্রতিবাদ করলে ধস্তাধস্তি হয়।’’ সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, কিছু দিন ধরেই তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। দলের কর্মীরা প্রচারে বের হলে নানা রকম হুমকি দিচ্ছে। দলের পক্ষ থেকে সব ঘটনাই নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।