—প্রতীকী ছবি।
আসন্ন বিধানসভা ভোটের জন্য দেওয়াল দখল শুরু করে দিল বিজেপি। রবিবার কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় দেওয়াল দখল হয়েছে। সেখানে তৃণমূল কিছুটা ব্যাকফুটে। তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি, গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার দলের নেতা-কর্মীদের সামাল দিতেই নাজেহাল নেতৃত্ব।
কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে যে-ই যখন ক্ষমতায় আসে, বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে আসে। সেটা সিপিএম হোক বা তৃণমূল বা বিজেপি। বিগত বিধানসভা নির্বাচনের বছরখানেক আগে উপনির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের সত্যজিৎ বিশ্বাস। পরের বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন। পঞ্চায়েত ভোটেও একই দাপট দেখান তিনি। কিন্তু তিনি খুন হয়ে যাওয়ার পরে তৃণমূলকে ক্রমশ কোণঠাসা করে মাথা তুলতে থাকে বিজেপি। গত বছর লোকসভা ভোটে প্রার্থী প্রায় ৪০ হাজার ভোটে লিড পান, একই সঙ্গে হওয়া কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রায় ২৯ হাজার ভোটে জয়ী হয় বিজেপি।
এর পর ঘুরে দাঁড়ানো দূরের কথা, প্রবল গোষ্ঠী কোন্দলে তৃণমূলের আরও শক্তিক্ষয় হয়েছে বলেই মনে করছেন দলের নেতাকর্মীদের একাংশ। নতুন জেলা ও ব্লক কমিটি তৈরি হওয়ার পর সেই বিভাজন আরও চওড়া হয়েছে। জেলা নেতৃত্ব সভা ডাকলেও সেখানে উপস্থিত হননি কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের বেশির ভাগ পঞ্চয়েত সমিতির সদস্য, সভাপতি থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বা সদস্যেরা। এমনকি বেশির ভাগ বুথ সভাপতি পর্যন্ত সেই কর্মিসভা বয়কট করেছিলেন। নেতাদের একাংশের মতে, যে পক্ষের লোক টিকিট পাবে না তারা কতটা সক্রিয় ভাবে ময়দানে নামবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। অনেকে দলের প্রার্থীকে হারানোর জন্য সক্রিয় না হলেও বসে যেতে পারেন, এমন আশঙ্কাও রয়েছে। বর্তমান ব্লক সভাপতি যেমন পদ হারিয়ে গোটা লোকসভা ভোট ঘরে বসে কাটিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ফলে এ বার তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারেন, এই আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
বিজেপির ৩৪ নম্বর জেলা পরিষদ মণ্ডল কমিটির সহ-সভাপতি বরুণ ঘোষ বলেন, “আমাদের লক্ষ্য জয়ের ব্যবধান আরও বাড়ানো। সেই কারণেই আমরা ঘরে বসে না থেকে এখন থেকে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাতে চাইছি।” তাঁর টিপ্পনী, “তৃণমূলের নেতারা কর্মীদের দিয়ে দেওয়াল দখল করবেন কী, ওঁরা তো নিজেদের ঝগড়া নিয়েই ব্যস্ত!” তবে তৃণমূলের কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোষ চৌধুরীর দাবি, “১ জানুয়ারি থেকে আমাদের কর্মীরা দেওয়াল দখল করতে নামবেন। তখন বিজেপি কেন, কোনও দলই আর সামনে দাঁড়াতে পারবে না।”