নাগরিত্ব আইনের পরে মতুয়া রাজনীতি আরও জটিল রূপ নিয়েছে। আগেই মতুয়াদের মধ্যে বিজেপি ও তৃণমূলপন্থী মেরুকরণ ছিল। এই আইনের পর কোন দল এই আইনকে কী ভাবে হাতিয়ার করে মতুয়াদের বেশি কাছে টানতে পারে তা নিয়ে দু’ তরফেই রণনীতি ঠিক করার কাজ চলছে। কারণ, নদিয়ায় ভোটের ফল নির্ধারণ করার অন্যতম ফ্যাক্টর হলেন মতুয়ারা।
রানাঘাট মহকুমা এলাকায় মতুয়া ভোটারদের কাছে টানতে নতুন কর্মসূচি নিয়েছে শাসক দল। এর মধ্যে পদযাত্রা, পথসভাও রয়েছে। রানাঘাট মহকুমা এলাকাতে বড় সভার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভার দত্তপুলিয়া এলাকায় ডিসেম্বরের শেষ ছয় দিন মতুয়া সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার মতুয়া উপস্থিত থাকবেন বলে দাবি স্থানীয় বিধায়ক সমীর পোদ্দারের। মতুয়াদের মধ্যে জনসংযোগের কাজও শুরু করেছেন শাসক দলের নেতারা।
মতুয়া ভোটাররা তৃণমূলের থেকে দূরে সরে গিয়েছে, এমনটা মানছেন না সমীরবাবু। তিনি বলেন, “আমাদের মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অটুট আছে। লোকসভা ভোটে বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরন করে বিভাজনের রাজনীতি করেছে। তাই অন্য ফল হয়েছে। কিন্তু মতুয়ারা জানেন, তাঁদের উন্নয়নের জন্য তৃণমূলই কাজ করছে।” তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর সিংহের বক্তব্য, “নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপি যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছিল তা মতুয়ারা বুঝতে পেরেছে। আমরা প্রচার চালাচ্ছি।”
কিন্তু এলাকার বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে থেকেই মতুয়াদের একটি বড় অংশ তাদের দিকে রয়েছে। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলছেন, “রানাঘাট লোকসভার ভোটের ফলেই স্পষ্ট যে, এখানকার মতুয়ারা বিজেপির দিকে আছেন। তাঁরা কেউ তৃণমূলের দিকে যাবে না। এসব শাসকের বৃথা আশা।”
রানাঘাট মহকুমার রানাঘাট দক্ষিন, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, কৃষ্ণগঞ্জের মত বিধানসভা এলাকাতে মতুয়াদের আধিক্য রয়েছে। লোকসভা ভোটে রানাঘাট লোকসভা হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। কৃষ্ণগঞ্জের মত তাঁদের একদা নিরাপদ আসনেও বিধানসভা উপনির্বাচনে হারতে হয়েছে। লোকসভা ভোটের নিরিখে রানাঘাট মহকুমা এলাকার একাধিক বিধানসভা আসনে পিছিয়ে রয়েছে শাসক দল। কাজেই বিধানসভা ভোটের দিকে চোখ রেখে এ বার এখানে মতুয়া মন পেতে শাসক দল যেমন মরিয়া তেমনি গেরুয়া শিবিরও নিজেদের মত করে মতুয়াদের মন পেতে চাইছে।