প্রতীকী চিত্র
জলঙ্গি রানিনগর ২ ব্লকের পরে এ বার রানিনগর ১ ব্লকের তৃণমূলের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল। ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নলবাটা এলাকার এক তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য এবং ট্যাকা রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ গোপালপুর এলাকার আরও এক সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ওই ঘটনা নিয়ে। যদিও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, ঘর দেওয়ার মালিক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য নয়। ফলে তাদের টাকা তোলার সম্ভাবনা নেই। ভোটের আগে সিপিএম নোংড়া খেলায় মেতেছে বলেও অভিযোগ তাদের। যদিও সিপিএমের অভিযোগ কাটমানি এখন তৃণমূলের সংস্কৃতি। ভোটের আগেই মোটা অঙ্কের টাকা তুলতে চাইছে সরকারি নানা প্রকল্প থেকে শাসক দলের সদস্যরা।
ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নলবাটা এলাকার সদস্য দাউদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ঘর দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কুড়ি হাজার করে টাকা তুলেছেন। এলাকার বাসিন্দা আসগর শেখ বলছেন, ‘‘টাকা না দিলে পরবর্তী কিস্তির টাকা দেয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়ে টাকা নেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে।’’ একা আসগর নন, গ্রামের এক সারবানু খাতুন বলছেন, ‘‘আমার কাছেও ঘর দেওয়ার নাম করে দাউদ হোসেন কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছিল, শেষমেষ কাকুতি-মিনতি করায় মাত্র ২ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে। গোটা বিষয়টি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’ রানিনগর ১ ব্লকের বিডিও মোহাম্মদ ইকবাল বলছেন, ‘‘এমন একাধিক অভিযোগ হয়েছে আমার কাছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সামনাসামনি বসিয়ে তদন্ত করার সময় সেগুলোর আর সারবত্তা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নতুন করে যে অভিযোগ হয়েছে, তার তদন্ত শুরু করেছি আমরা।’’ তৃণমূলের দাউদ হোসেন বলছেন, ‘‘পুরোপুরি ভিত্তিহীন অভিযোগ, একেবারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ট্যাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ গোপালপুর এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে একাধিক পরিবারের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার। এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম বলছেন, "ওই সদস্যের স্বামী মাঠে নেমেছে কাটমানি তুলতে। আমি ছাড়াও একাধিক পরিবারের কাছ থেকে টাকা তুলেছে ঘর দেওয়ার নাম করে। আমি গোটা বিষয়টি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছি।’’
সোমবার ডোমকল বিডিও-র কাছে বিষয়টি নিয়ে স্মারকলিপি জমা দেয় সিপিএম। ফরওয়ার্ড ব্লকের ইসলামপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক কাবাতুল্লাহ শেখ বলছেন, ‘‘কেবল এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত নয়, ইসলামপুর জুড়েই চলছে কাটমানির রাজত্ব। বিধানসভায় সরকার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তড়িঘড়ি করে জোরকদমে কাটমানি তোলার কাজ চলছে বিভিন্ন এলাকায়।’’ যদিও রানিনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের আমিনুল হাসান বলছেন, ‘‘ভোটের আগে বামেরা নোংড়া খেলায় মেতেছে। কাটমানি নিয়ে আমি নিজে মাইক দিয়ে প্রচার করেছি, সামাজিক মাধ্যমে লাইভ করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের সতর্ক করা হয়েছে, ফলে এমন কোনও ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।’’