বাড়িতে চিঠি লিখে নিখোঁজ। — নিজস্ব চিত্র।
লাইন টানা খাতার ছেঁড়া পাতায় অপরিণত হাতে লেখা— ‘‘মা আমাকে ক্ষমা করে দিও। তোমাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি। ১০ বছর বাদে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ফিরব। যে টাকা নিয়ে গেলাম তার জন্য ক্ষমা করো। তোমার দেব।’’ বাড়িতে এমনই চিঠি লিখে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল নদিয়ার বাদকুল্লার অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া। খোঁজ মিলছে না তার দুই সহপাঠীরও। তাঁদের সন্তানদের পরিকল্পিত ভাবে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজদের অভিভাবকেরা। বিষয়টি জানানো হয়েছে পুলিশে। তদন্ত শুরু করেছে রানাঘাট জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ তিন ছাত্ররা হল নদিয়ার তাহেরপুর থানার বাদকুল্লার বাসিন্দা অপূর্ব দাস, দেব বিশ্বাস এবং শান্তিপুর থানার বাসিন্দা সায়ন সরকার। তারা তিন জনই অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। বাদকুল্লা ইউনাইটেড অ্যাকাডেমিতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অপূর্ব এবং দেব। সায়ন আরবান্দি নেতাজি বিদ্যাপীঠের ছাত্র। তিন জন ভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র হলেও বাদকুল্লায় সুরভি এলাকায় এক গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ার সুবাদে তিন জনের বন্ধুত্ব। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোয় তিন জন। অভিভাবকদের দাবি, এর পর তারা আর বাড়ি ফেরেনি।
এর মধ্যেই নিখোঁজ পড়ুয়াদের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে দেবের পড়ার ঘর থেকে একটি রহস্যজনক চিরকুট উদ্ধার হয়। দেবের বাবার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে তোলা হয়েছে দু’হাজার টাকাও। তিন জনই বাড়ি থেকে বাড়তি জামাকাপড় সঙ্গে নিয়েছে বলে পরিবারের দাবি। তাদের পরিবারের আশঙ্কা, কোনও দুষ্টচক্র তাদের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে অপহরণ করেছে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে শান্তিপুর এবং তাহেরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিখোঁজ পড়ুয়াদের পরিবারের সদস্যেরা।
এ নিয়ে রানাঘাট পুলিশ সুপার কে কান্নান বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’