মৌপ্রিয়া রাহা। নিজস্ব চিত্র
ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে এ বার আর নেতা নয়, এক নেত্রীর উপরেই ভরসা করল এসএফআই। সংগঠনের জেলা সম্পাদক পদে বসলেন তাহেরপুরের কলেজ ছাত্রী মৌপ্রিয়া রাহা। এ রকম কোনও নজির আগে নেই। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-ও বলছেন, ‘‘এর আগে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক পদে কোনও ছাত্রী বসেছেন বলে মনে করতে পারছি না।’’
টিএমসিপি এবং এবিভিপি-র মধ্যে লড়াইয়ে আপাতত কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছে এসএফআই। সংগঠন সামলে লড়াইয়ে ফেরাই এই মুহূর্তে তাদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন-সহ নানা বিষয় নিয়ে ছাত্রসমাজের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া সহজ নয়। বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়াদের আস্থা এবং সমর্থন ফিরে পাওয়াই প্রথম কাজ।
এই অবস্থাতেই তাহেরপুর শহরের ই-ব্লকের বাসিন্দা, রানাঘাট কলেজের ইংরেজি অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী মৌপ্রিয়ার ছাত্র সংগঠনের ভার ন্যস্ত করা হল। তাঁর বাবা প্রদীপ রাহা স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী এবং বামপন্থী সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। মা মধুমিতা রাহা সিপিএমের তাহেরপুর এরিয়া কমিটির সদস্য। মৌপ্রিয়া জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার আগেই, ২০১৪ সালে এসএফআইয়য়ের সদস্য হন তিনি। ২০১৬ সালে সংগঠনের তাহেরপুর লোকাল কমিটির সহ-সম্পাদক ও হাঁসখালি জোনালের সহ-সভাপতি পদে আসেন। ওই বছরই জেলা সম্মেলনে জেলা কমিটির সদস্য হওয়া। পরে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর আমন্ত্রিত সদস্যও হন।
রবিবারই রানাঘাটে শেষ হয়েছে এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলন। জেলা সভাপতি পদে এসেছেন সবুজ দাস। গঠিত হয়েছে ৫৭ জনের জেলা কমিটি। সংগঠন সূত্রের খবর, এর মধ্যে ২৫ শতাংশই মহিলা মুখ। জেলা কমিটির গড় বয়সও ২১ বছরের নীচে নামিয়ে আনা হয়েছে। সিপিএমের বর্তমান জেলা সম্পাদক আটের দশকে এসএফআইয়ের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন। সুমিতের দাবি, “এখন অনেক তরুণ এবং মেধাবী পড়ুয়ারা এসএফআইয়ের সংগঠনে কাজ করার জন্য এগিয়ে আসছেন। এঁরাই শেষ পর্যন্ত বাম শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।”
সদ্য দায়িত্ব পাওয়া মৌপ্রিয়া বলেন, “কলেজে-কলেজে ক্যাম্পাসে সংগঠন শক্তিশালী করা হবে আমাদের প্রথম কাজ। আগামী দিনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলে তাতে প্রতিদ্বন্দিতা করা এবং লড়াইয়ের ময়দানে থেকে জয় সুনিশ্চিত করা দ্বিতীয় লক্ষ্য।” তাঁর পূর্বসূরী, এসএফআইয়ের সদ্যপ্রাক্তন জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য কমিটির সদস্য শান্তনু সিংহ বলেন, “এটা এক ঐতিহাসিক সময়। এসএফআইকে ফের ক্যাম্পাসমুখী করে তোলার কাজ হচ্ছে। অনেক নতুন ছেলেমেয়েরা আসছেন। তাঁদের হাত ধরেই সংগঠন এগিয়ে যাবে।”