ফাইল চিত্র।
স্কুল সার্ভিস কমিশন শিক্ষক নিয়োগের কথা জানানোর পরই নিজের-নিজের স্কুলের শূন্যপদের হিসাব-নিকাশ শুরু করছেন বিদ্যালয়ের প্রধানেরা। খতিয়ান বলছে, শুধু প্রত্যন্ত গ্রাম নয় জেলার বহু শহরের স্কুলে শিক্ষকের শূন্যপদের সংখ্যা দেখলে চমকে উঠতে হবে।
যেমন, নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যালয়ে ১০টি, নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলে ৫টি, কৃষ্ণনগর হাইস্কুলে ৩টি, চাকদহ রামলাল অ্যাকাডেমিতে ৩টি অথবা বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষকের পদ খালি। খাস জেলাসদরে কৃষ্ণনগর হাইস্কুলে দীর্ঘদিন ধরে ৩টি পদ ফাঁকা। প্রধান শিক্ষক উৎপল ভট্টাচার্য বলেন, “উৎসশ্রী চালু হওয়ার পর থেকে অনেকেই স্কুলে যোগাযোগ করে জানিয়েছেন যে, তাঁরা আমাদের স্কুলের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি পদেও কোনও শিক্ষক কেন এলেন না সেটা আমাদের কাছেও অজানা।”
নবদ্বীপ শহরে নবদ্বীপ বালিকা বিদ্যালয়ের শূন্যপদের সংখ্যা ১০টি। এখানে মোট অনুমোদিত শিক্ষিকা পদ ৩১টি। কিন্তু বর্তমানে প্রধানশিক্ষিকা ও সহ-প্রধান শিক্ষিকা-সহ রয়েছেন মাত্র ২০ জন। পিওর সায়েন্সে ৩ জন, ভূগোলে ১ জন, সংস্কৃত এবং বাংলায় ২ জন করে উচ্চ-মাধ্যমিক পদার্থবিদ্যা এবং কম্পিউটার সায়েন্সে ১ জন করে শিক্ষিকা নেই।
বিদ্যালয় প্রধান শ্রুতি লাহিড়ী বলেন, “উৎসশ্রীর মাধ্যমে চার জন শিক্ষিকা চলে গিয়েছেন, কিন্তু মাত্র এক জন এসেছেন। ২০১৪ সালে জেনারেল ট্রান্সফারের মাধ্যমে চলে যাওয়া শিক্ষিকাদের দু’টি শূন্যপদ এখনও পূরণ হয়নি। অবসর নিয়েছেন এমন শিক্ষিকাদের পদও শূন্য।”
নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলের প্রধানশিক্ষক সুখেন্দুনাথ রায় বলেন, “মোট ৫ জন শিক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে। বাংলা, ইংরাজি, সংস্কৃত, অর্থনীতি এবং শরীরশিক্ষার শিক্ষক নেই।”
নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক দীপঙ্কর সাহা বলেন, “আমাদের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে মোট ৪ জন শিক্ষকের পদ খালি।’’
চাকদহ রামলাল অ্যাকাডেমির মতো স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগের ৩টি পদে শিক্ষক নেই। প্রধানশিক্ষক রিপন পাল বলেন, “পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিদ্যা এবং কমার্সের শিক্ষকের পদ শূন্য। উচ্চ মাধ্যমিকের পড়ুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই এ বার সব দিক বজায় রেখে শিক্ষক নিয়োগের কাজটি হোক।”
প্রধানশিক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, উৎসশ্রীর মাধ্যমে অনেকেই স্বল্প ছাত্রছাত্রী রয়েছে এমন স্কুল খুঁজছেন। ফলে সমস্যায় পড়ছে সেই সব স্কুল যাদের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশি। নতুন নিয়োগ হলে এই সব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে আশা করা যায়।
শিক্ষকদের এই আশা কতটা পূরণ হয় তা সময়ই বলবে।