সকালে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার মানুষ। ছবি: সুদেব দাস।
বৃহস্পতিবার রাতে মন্দিরে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটল রানাঘাট থানার হবিবপুরের রাঘবপুর বাজার এলাকায়। নগদ টাকা ও প্রতিমার গয়না-সহ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সামগ্রী চুরি হয়েছে বলে মন্দির কর্তৃপক্ষের অভিযোগ। মন্দির থেকে একশো মিটার দূরত্বের মধ্যেই রয়েছে রানাঘাট থানার একটি পুলিশ ফাঁড়ি। রাতে বাজারে নৈশ প্রহরীরও ব্যবস্থা থাকে। তার পরেও কী ভাবে এই চুরির ঘটনা সম্ভব হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
হবিবপুর রেল স্টেশনের কাছেই রাঘবপুর বাজার। প্রায় বছর তিনেক আগে ওই বাজার এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি হয় একটি কালী মন্দির। শুক্রবার ভোর প্রায় পাঁচটা নাগাদ বাজারের এক নৈশ প্রহরীর নজরে আসে, মন্দিরের মূল লোহার গেটের তালা ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। তিনি প্রথমে ফোন করে মন্দিরে চুরির ঘটনার কথা জানান মন্দির কমিটির এক সদস্যকে। জানা গিয়েছে, মূল গেটের তালা ভাঙার পাশাপাশি মন্দিরের গর্ভগৃহের কাঠের দরজার তালা ভাঙারও চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু সেই তালা ভাঙা সম্ভব না হওয়ায় লোহার ভারী কিছু দিয়ে কাঠের দরজার হাসবোল্ড উপড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। মন্দির কমিটির সদস্যেরা জানাচ্ছেন, প্রণামী বাক্স চুরি করেছে দুষ্কৃতীরা। এ ছাড়া, প্রতিমার সোনা ও রুপোর গয়না, বিভিন্ন সামগ্রী খোয়া গিয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহের সমস্ত কিছুই রাতে তছনছ করে চোরেরা।
মন্দিরের নিজস্ব চারটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে। অভিযোগ, ওই রাতে তিনটি ক্যামেরাই অকেজো করে দেয় দুষ্কৃতীরা। বিষয়টি নিয়ে মন্দির কমিটির কোষাধ্যক্ষ প্রীতিশকুমার দাস বলেন, ‘‘সকালে প্রথম আমি খবর পাই যে, মন্দিরের দরজা ভাঙা হয়েছে। একটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় তিন-চার জন দুষ্কৃতী আনাগোনার ছবি ধরা পড়লেও সেই ছবি স্পষ্ট নয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ-লক্ষ টাকার সামগ্রী চুরি হয়েছে।’’
ঘটনার খবর পেয়ে তদন্তে আসেন রানাঘাট থানার আধিকারিকেরা। এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, চুরির ঘটনার আগে মন্দিরে কোথায়-কোথায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে, তা আগে থেকেই জানা ছিল ওই দুষ্কৃতীদের।
এলাকার মানুষ জানাচ্ছেন, চুরির ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েকটি দোকান ও গৃহস্থ বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। সেই সব চুরির ঘটনার এখনও কিনারা হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, নিয়মিত পুলিশি টহলদারি না থাকার কারণেই এলাকায় চুরির ঘটনা বাড়ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।