প্রতীকী চিত্র।
আসন সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ হতেই ধুলিয়ান ও জঙ্গিপুরে পুর-প্রচারের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ল শাসকদল তৃণমূল। দেওয়াল দখল থেকে স্ট্রিট কর্নার, কর্মীদের মিছিল— পিছিয়ে নেই বিরোধীরাও। সিপিএম দেওয়াল দখল করে প্রতীক আঁকার কাজ শুরু করে দিয়েছে। ধুলিয়ানে দেওয়াল দখলে নেমে পড়েছে কংগ্রেস।
দু’টি পুরসভা বর্তমানে তৃণমূলের দখলে থাকলেও তা নিতান্তই বিরোধীদের দল ভাঙিয়ে বোর্ড দখল। গত নির্বাচনে ধুলিয়ানে ২১ সদস্যের পুরসভায় নির্বাচিত হন কংগ্রেসের ৮ জন, ২ জন সিপিএমের, ৪ জন বিজেপি-র, ৬ জন তৃণমূলের ও এক জন নির্দল সদস্য। সেই ধুলিয়ান পুরসভা এখন বিরোধী শূন্য। ২১ জন কাউন্সিলারই যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে।
২১ সদস্যের জঙ্গিপুর পুরসভায় তৃণমূল একটিও আসন পায়নি। গত পুর নির্বাচনে নির্বাচিত হন সিপিএমের ১৩ জন, আরএসপির ১ জন, কংগ্রেসের ৫ জন, বিজেপি ও এসইউসির এক জন করে সদস্য। বামেরা বোর্ড গড়লেও দলবদলে ১৪ জনের সমর্থনে এখন তা তৃণমূলের কব্জায়। কিন্তু দল বদলেও দু’টি পুরসভাতেই আমজনতার সমর্থন আদায়ে যে তৃণমূল সে ভাবে সফল হতে পারেনি তার প্রমাণ গত লোকসভা নির্বাচনের ফল। লোকসভায় ধুলিয়ানে ২১টির মধ্যে ১৬টি ওয়ার্ডেই শোচনীয় ভাবে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ওই সব ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৬টিতে, কংগ্রেস এগিয়েছে ১০টি ওয়ার্ডে। তৃণমূল ৫টিতে এগিয়ে থাকলেও তা নামমাত্র ভোটের ব্যবধানে।
জঙ্গিপুরে ৯টি ওয়ার্ডে বিজেপি ও ১টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস এগিয়ে ছিল বহু ভোটের ব্যবধানে। তবে, ১১টিতে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। স্বভাবতই জঙ্গিপুর ও ধুলিয়ান পুরসভা নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের পুরপ্রধান থেকে শুরু করে দলের নেতারা অস্বস্তিতে।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেস ও সিপিএম জানিয়ে দিয়েছে দু’টি পুরসভাতেই তারা লড়বে জোট করে। ইতিমধ্যেই দু’টি দলের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ধুলিয়ান ও জঙ্গিপুরে দু-দফা বৈঠকও হয়েছে। ধুলিয়ান শহর কংগ্রেসের সভাপতি কাশীনাথ রায় জানান, ২২ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক হবে কংগ্রেসের। তার আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি শহরের ৬৫টি বুথের কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে ধুলিয়ানে সভা করবেন সাংসদ অধীর চৌধুরী। শহরের মানুষ বর্তমান পুরবোর্ডের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিতে তাকিয়ে রয়েছেন কংগ্রেসের দিকে। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তোয়াব আলি বলছেন, “জোট নিয়ে অনেকটাই এগিয়েছি আমরা। জোট হবেই। কারণ ধুলিয়ানের মানুষ এই জোট চান।”
ধুলিয়ানের পুরপ্রধান তৃণমূলের সুবল সাহা অবশ্য বলছেন, “জাতি ভিত্তিক মেরুকরণের জন্যই লোকসভা ভোটে ধুলিয়ান শহরে কয়েকটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের ভোট কমেছে। কিন্ত পুরসভা ভোট হয় স্থানীয় সমস্যার উপর। জল সরবরাহ প্রকল্প, রাস্তা, শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি-উন্নয়ন তো কম কম হয়নি ধুলিয়ানে।”