প্রতীকী ছবি।
বিদেশে চাকরির নাম করে প্রতারণার অভিযোগে দুই দালালকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতেরা হল হাঁসখালির বগুলা এলাকার বাসিন্দা সনৎ সাহা ও পরিতোষ ঘোষ। তাদের রানাঘাট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই দুই ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে টাকার বিনিময়ে বিদেশে বিভিন্ন সংস্থায় শ্রমিক পাঠানোর কাজ করে আসছে। মাস ছয়েক আগে তারা নদিয়ার হাঁসখালি ও উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কয়েকজন যুবককে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে সৌদি আরবে পাঠায়। ওই শ্রমিকদের পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। বিনিময়ে তাঁদের ২৫-৩০ হাজার টাকা বেতনের কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। মাস ছয়েক আগে তাঁদের সৌদি আরবে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর কোনও কাজ দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ দিন বসে থাকার পর যুবকদের পরিবারের লোকজন ওই দালালদের চাপ দিতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তাঁদের অন্য একটি সংস্থায় কম বেতনের কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কাজের জন্যও তাঁরা দেড় মাসের বেশি বেতন পাননি।
হাঁসখালির শ্যামনগর এলাকার বাসিন্দা মিষ্টি আলি মণ্ডল ও প্রসেনজিৎ বারুই এদের মাধ্যমেই সৌদি আরবে কাজে গিয়েছেন। মিষ্টির বাবা মোচাহক মণ্ডল বলেন, “মোটা সুদে টাকা ধার নিয়ে ছেলেকে কাজে পাঠিয়েছি। যে সংস্থার নাম করে যে টাকা বেতন দেবে বলে ওরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার কোনওটাই হয়নি।” তাঁর অভিযোগ, “দিনের পর দিন কাজ না দিয়ে বসিয়ে রাখছে। এত দিনে মাত্র দেড় মাসের বেতন পেয়েছে। তা-ও অনেক আগে। ওখানকার খাবারের দোকানের দেনা শোধ করার পর ওদের হাতে আর কিছু নেই। প্রায় না খেয়েই থাকতে হচ্ছে।” প্রসেনজিতের বাবা প্রফুল্ল বারুইয়ের অভিযোগ, “ওই দুই এজেন্ট আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ওখানে প্রায় ৪০ জন একই রকম কঠিন অবস্থার মধ্যে আছে। সংস্থা ওদের পাসপোর্ট নিয়ে রেখেছে। ফলে চাইলেও ওরা বাড়ি ফিরতে পারছে না।”
পরিবারের দাবি, সৌদি আরব থেকে ছেলেরা বারেবারে তাদের সমস্যার কথা জানালে ওই এজেন্টদের কাছে যাওয়া হত। তাদেরকে বিষয়টি বলার পরও কোন লাভ না হওয়ায় তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরে অভিযুক্ত দুই এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়।