গাছে বাঁধা হচ্ছে এমন বাসা। নিজস্ব চিত্র
ঝড়ে ভেঙেছিল অনেক গাছ। ভেঙে পড়েছিল বিভিন্ন গাছে থাকা পাখির বাসা। নিরাশ্রয় হয়ে পড়া সেই পাখিদের আস্তানা গড়ে দেওয়ার কাজে নামলেন একদল যুবক। নিজেরাই পাখিদের জন্য বাসা তৈরি করে দেওয়ায় উদ্যোগী হলেন তাঁরা।
সম্প্রতি প্রাকৃতিক বিপর্যয় আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু গাছ। এই ধরনের নানা গাছে ছিল পাখিদের আস্তানা। ঝড়ের কারণে পাখির বাসাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক জায়গায় পাখির বাসা সমেত গাছের ডাল যেমন ভেঙে পড়েছে, তেমনই অনেক জায়গায় ঝড়ের দাপটে পাখির বাসা দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে। এর জেরে গাছহীন এলাকায় নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছে বহু পাখি।
সম্প্রতি বিষয়টি নজরে আসে শান্তিপুরের বাসিন্দা কিছু যুবকের। তাঁদের একটি সামাজিক সংস্থা রয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পরে তাঁরা স্থির করেন নিজেরাই এই পাখিগুলির জন্য বাসা তৈরি করে দেবেন। সেই মতো তাঁরা কয়েক জন মিলে পাখির বাসা তৈরিতে উদ্যোগী হন। শুকনো ঘাস, বিচালি, নারকেলের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে তাঁরা তৈরি করেন কৃত্রিম পাখির বাসা। পাশাপাশি, মিষ্টি বা দই বিক্রির জন্য ব্যবহৃত ছোট মাটির হাঁড়ি ব্যবহার করে, তার মধ্যে বিচালি, ঘাস ইত্যাদি দিয়ে আরেক ধরনের বাসা তৈরি করেন। অল্প সময়ের মধ্যে এই ধরনের চল্লিশটির মতো পাখির বাসা তাঁরা তৈরি করতে পেরেছেন। মঙ্গলবার শান্তিপুরের নানা জায়গায় গাছের ডালে, আবার গাছের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় এই বাসা বেঁধে দেন তারা।
সংস্থার সদস্য প্রদ্যোত মহলদার বলেন, ‘‘ঝড়ের কারণে বহু পাখি বাসা হারিয়ে নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছিল। সেটা দেখেই স্থির করি, অসহায় এই পাখিদের জন্য বাসা বেঁধে দেব। তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা যাতে দ্রুত করা যায়, সে কথা মাথায় রেখেই কাজ করেছি।’’
সোমবার রাত থেকেই সংস্থার সদস্যরা এই পাখির বাসা তৈরির কাজ শুরু করেন। রাতেই বেশ কিছু পাখির বাসা তৈরি হয়ে যায়। পরে মঙ্গলবার সকালের দিকেও আরও বেশ কিছু বাসা তৈরি করা হয়। পরেও তাঁরা আরও এই ধরনের বাসা পাখিদের জন্য তৈরি করবেন বলে জানাচ্ছেন সংস্থার সদস্য শুভঙ্কর মহলদার, অভিজিৎ সরকাররা। ওই সংস্থার জনা দশেক সদস্য এগুলো তৈরির কাজ করেছেন। এ দিন তা গাছে বসানোর সময়ে ১৮ জন হাজির ছিলেন।
উদ্যোক্তাদের এক জন বলছেন, ‘‘বাসা ভাঙার পরে পাখিরা আবার বাসা ফিরে পাবে, তা ভেবেই খুশি আমরা।’’