করোনার ক্ষেত্রে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাজারগুলোই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। জুলাইয়ে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার উপর মানুষের বেপরোয়া মনোভাব আরও চিন্তায় ফেলছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। শুক্রবার রথ উপলক্ষে নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর, কল্যাণী-সহ বিভিন্ন মেলায় দেখা গিয়েছে মানুষের ঢল। করোনা বিধি মানার কোনও বালাই ছিল না। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন বাজার ও হাটে।
দক্ষিণে শান্তিপুরের কাপড়ের হাট, রানাঘাট, চাকদহের বিভিন্ন বাজার, উত্তর ২৪ পরগনার লাগোয়া হরিণঘাটার বিরহীর গরুর হাট, নগরউখরার আনাজের বাজার, কাষ্ঠডাঙা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নিমতলার বাজার স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নজরে রয়েছে। এদের মধ্যে শান্তিপুরের কাপড়ের হাটে অন্য রাজ্যে থেকে মানুষ আসেন কাপড় কিনতে। হরিণঘাটার বিরহীর গরুর হাটে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন। এই হাট দু’টির পাশাপাশি রয়েছে কাষ্ঠডাঙা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নিমতলার বাজার। দুই জেলার সীমান্ত লাগোয়া ওই বাজার। দুই জেলার মানুষেরই আসা-যাওয়া রয়েছে সেখানে। নিকট অতীতের সব ক’টি করোনার ঢেউয়ে উত্তর ২৪ পরগনা এবং সেই জেলা-লাগোয়া নদিয়ার অংশে করোনা মারাত্মক আকার নিয়েছে। হরিণঘাটা এলাকায় সংক্রমণ বেশি হয়েছে। গত কয়েক দিনের সংক্রমণের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে, জেলার দক্ষিণেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তাই স্বাস্থ্য দফতর এই বাজারগুলির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে।
জেলায় এখন ৩৫টি করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। এখনও পর্যন্ত বেশির ভাগ করোনা-আক্রান্তের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হচ্ছে না। বাড়িতে হোম আইসোলেশনেই চিকিৎসা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জেলার সব হাসপাতালে করোনার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড, করোনা ওয়ার্ড বন্ধ রয়েছে। যদি কারও হাসপাতালে ভর্তির দরকার হয় সে ক্ষেত্রে ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের থেকে আলাদা করে এক পাশে ‘এয়ার মার্ক’ করে সেই রোগীর চিকিৎসা করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
কল্যাণী করোনা হাসপাতালে আপাতত কোনও রোগী ভর্তি নেই। তবে সমস্ত পরিকাঠামোই প্রস্তুত রাখা আছে। সেখানে তিন জন চিকিৎসক, পাঁচ জন নার্স ও দু’জন গ্রুপ ডি স্টাফ রয়েছেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপনকুমার দাস বলেন, “ওই হাসপাতালে কোনও রোগী এখন ভর্তি হবেন না। তাই আগামী সপ্তাহেই ওই চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হবে। তাঁরা আগে যেখানে কর্তব্যরত ছিলেন সেখানেই আবার ফিরে যাবেন।”