প্রতীকী ছবি।
এমনিতেই সিএএ, এনআরসি নিয়ে বহু মানুষ আতঙ্কিত। তার মধ্যে নতুন ভোটার কার্ডে দেওয়া ভুল পিন কোড নম্বর শঙ্কা বাড়িয়েছে।
সম্প্রতি এমন নতুন ভোটার কার্ড নিতে অস্বীকার করেছেন থানারপাড়ার সাদিপুরের মানুষেরা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, একশো শতাংশ সংখ্যালঘু মানুষের বাস এখানে। ৭৮ নম্বর তেহট্ট বিধানসভা এলাকার ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বর বুথের যাঁদের হাতে নতুন ভোটার কার্ড এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে কার্ডে দেওয়া ঠিকানায় গ্রামের নাম ঠিক লেখা থাকলেও পিনকোড ভুল রয়েছে। সেটি আড়ংঘাটার পিনকোড। এই ভুলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে এলাকায়। কেউই ভুল তথ্য দেওয়া ভোটার কার্ড নিতে রাজি নন।
স্থানীয় বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) আসরফ আলি মণ্ডল, গোলাম কিবরিয়া জানান, এখানে ২৯ নম্বর বুথের পিন কোড নম্বর— ৭৪২১২১ এবং ৩০ ও ৩১ নম্বর বুথের পিন কোড— ৭৪১১৬৫। যা ২০১৬ সালের ভোটার তালিকায় ঠিক ছিল। কিন্তু ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের তালিকায় ভুল পিন নম্বর রয়েছে— ৭৪১৫০১। এ ব্যাপারে বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও এই ভুল সংশোধন হয়নি। তারা আরও জানান ২৯ নম্বর বুথে এবার ১৪৫ টি ও ৩০ নম্বর বুথে ৮৩টি নতুন ভোটার কার্ড এসেছে। কিন্তু এই ভুলের কারণে কেউ নতুন ভোটার কার্ড নিতে চাইছেন না। সাদিপুরের বাসিন্দা সেরফুল আলম, লাইলা বিবি শেখ, মোস্তাক রাজা শেখ, বৃদ্ধ বাবর আলি বিশ্বাসেরা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এমনিতেই মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়িয়েছে। রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তা নিয়ে প্রতিবাদ-আন্দোলন চলছে। নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে অনেকেই ছুটে বেড়াচ্ছেন সরকারের বিভিন্ন দফতরে। আধার কার্ডের জন্য রাত জেগে পোস্ট অফিস বা ব্যাঙ্কের সামনে মানুষের লম্বা লাইন পড়ছে। এর মধ্যে ভোটার কার্ডে পিন নম্বর ভুল থাকায় মানুষ আরও বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
অন্য দিকে, নামের বানান কিংবা ঠিকানার পিন কোড ভুল থাকার কারণে ব্যাঙ্কে বা পাসপোর্ট নবীকরণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ ছাড়াও সরকারি অফিসে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ মানুষ। তাঁদের দাবি— অবিলম্বে ভোটার কার্ডের ভুল সংশোধন করা হোক। এবং ভোটার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথির ক্ষেত্রে এই জাতীয় বিভ্রান্তি বন্ধ হোক।
তেহট্টের মহকুমাশাসক অনীশ দাসগুপ্তা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’