মুর্শিদাবাদের বহরমপুর ডিআই অফিসে যান রাজ্যের সিআইডি আধিকারিকরা। —নিজস্ব চিত্র।
এক মেমো নম্বরে টানা তিন বছর বেতন পেয়েছেন ২ জন শিক্ষক! শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের শুরুতেই এমনই তথ্য পেল সিআইডি।
শনিবার শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর ডিআই অফিসে যান রাজ্যের সিআইডি আধিকারিকরা। সেখানে জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই), প্রাক্তন ডিআই, একাধিক স্কুলের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান এবং জেলার শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিককে প্রায় ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সূত্রের খবর, বহরমপুর শিক্ষা ভবনে সিআইডি দল তদন্তে আসছেন, এই খবর পেয়ে বর্তমান জেলা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল জেলা বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের সংশ্লিষ্ট সব আধিকারিক-সহ জেলা শিক্ষা দফতরের বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ডেকে পাঠান। মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অমর এবং প্রাক্তন পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি আধিকারিকরা।
জিজ্ঞাসাবাদ এবং নথি পর্যালোচনা করতে গিয়ে সিআইডির হাতে উঠে এসেছে এই এক মেমো নম্বরের দুই শিক্ষকের বেতন পাওয়ার বিষয়টি।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক অরবিন্দ মাইতির নিয়োপত্রের মেমো নম্বর জাল করে তাঁর বাবা যে স্কুলের প্রধানশিক্ষক, সেখানে চাকরি পান জনৈক অনিমেষ তিওয়ারি। এবং তওই নিয়োগের সুপারিশপত্র দেন তৎকালীন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস। এমনই অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন চাকরিপ্রার্থী সোমা রায়। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে ব়ঞ্চিত করে ওই চাকরি পেয়েছেন অনিমেষ।
বৃহস্পতিবার ওই মামলার তদন্তে রাজ্য তদন্তকারী সংস্থার সিআইডির হাতে ন্যস্ত করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তার আগে বুধবার অনিমেষের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এমনকি, অনিমেষ স্কুলে প্রবেশ করতে পারবেন না। শনিবার এই তদন্তে সিআইডির সামনে আসে একই মেমোতে দুই শিক্ষকের বেতন পাওয়ার বিষয়টি।
কী ভাবে জাল নিয়োগপত্র তৈরি হল, এই প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, ‘‘অনিমেষ তিওয়ারি ও তাঁর বাবা তথা প্রধানশিক্ষক আশিস তিওয়ারির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে থানায় এফআইআর করেছি।’’
বৈধ অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে দিনের পর দিন বেতন পেয়ে গেলেন অভিযুক্তেরা, অনলাইনে বেতন হলেও কেন একই মেমো নম্বরে দু’জন শিক্ষকের বেতন হল, তা খতিয়ে দেখতে সিআইডি দল যায় বহরমপুর শিক্ষা ভবনে।