তাপস সাহা ফের সামনে আনলেন সেই ‘চক্রান্ত’ এবং ‘টিনা ভৌমিক সাহা’ প্রসঙ্গ।
এর আগেও বার বার তিনি দাবি করেছেন, দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, তদন্ত হলেই তা প্রমাণ হয়ে যাবে।
টানা প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার সিবিআই ফিরে যেতেই তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা ফের সামনে আনলেন সেই ‘চক্রান্ত’ এবং ‘টিনা ভৌমিক সাহা’ প্রসঙ্গ।
নদিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য টিনা ভৌমিক সাহার সঙ্গে বার বার প্রকাশ্য সংঘাত হয়েছে বিধায়ক তাপসের। টিনা সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। বিজেপির তরুণজ্যোতি তিওয়ারিকে আইনজীবী করে যে ভাবে তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্য হাই কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন, তার পিছনেও টিনারই হাত দেখেছেন তাপস। এ দিনও সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সরাসরি টিনার নাম করে তাপস দাবি করেন, “এই চক্রান্ত টিনা ভৌমিক সাহা-সহ তৃণমূলের একাংশ ও বিজেপি করছে।”
দলেরই একাংশ যে এই চক্রান্তে জড়িত, তার প্রমাণ সিবিআইয়ের প্রশ্নেই পাওয়া গিয়েছে বলে তাপস মনে করছেন। তিনি জানান, সিবিআই তাঁর কাছে ‘মলয়’ ও ‘মিঠু’র বিষয়ে জানতে চেয়েছে। তাপসের প্রশ্ন, “মলয় ও মিঠুর নাম সিবিআইয়ের অফিসারেরা কী করে জানলেন?”
তৃণমূল সূত্রের খবর, মলয় ও মিঠু দু’জনেই তাপসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তেহট্ট ১ ব্লকের প্রাক্তন টিএমসিপি সভাপতি, বর্তমানে তেহট্ট পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মলয় বিশ্বাস। অন্য জন, মিঠু ওরফে সাজিজুল হক করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সম্পাদক। দুর্নীতি মামলার তদন্তে এসে সিবিআই তাঁদের াম তোলায় তাপসের সন্দেহ, “দলেরই ভিতর থেকে কেউ সিবিআইকে খবর সরবরাহ করছে।” এ দিন এক সময়ে রটে যায় যে সিবিআই করিমপুরের দিকে যাচ্ছে মিঠুর বাড়িতে তদন্ত চালানোর জন্য। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা হয়নি। পরে মিঠু দাবি করেন, “গত বিধানসভা ভোটে তাপসদার বিরোধিতা করেছিল টিনা। আমরা পাশে ছিলাম। তাই আমাদের বিরুদ্ধেও চক্রান্ত করেছে টিনা। তাই আমাদের নামও থাকবে এটা আমরা ভেবেই রেখেছিলাম।” মলয়ের দাবি, “আমি বিধায়কের সঙ্গে একমত যে কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করছে আর সেটা বঙ্গজননীর সভানেত্রী টিনা ভৌমিক সাহা। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি এ সব করছেন।”
টিনা অবশ্য বরাবরের মতোই তাপসের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সিবিআই কেন মিঠু আর মলয়ের নাম তুলল, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি পাল্টা বলেন, “কোন এজেন্সি কাকে কী প্রশ্ন করবে তা কি আমি শিখিয়ে দিয়েছি? আমি কি এতটাই প্রভাবশালী হয়ে গিয়েছি?”
এই পরিস্থিতিতে দল কি তাপসের পাশে আছে? তাপস নিজে আক্ষেপ করেছেন, দলের জেলা নেতারা কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের নদিয়া জেলা উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, “এটি স্থানীয় রাজনৈতিক বিষয়। দলের প্রত্যেককে সংযত থাকতে বলা হয়েছিল।”