তৈরি হচ্ছে মাস্ক। নিজস্ব চিত্র
আর ক’দিন পরেই স্বাধীনতা দিবস। এ বছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তেরঙা মাস্ক তৈরিতে ব্যস্ত অনেক দর্জি ও কারিগর। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের আগে ছোট-বড় পতাকা, তেরঙা রিস্ট বেল্ট, টুপি, ব্যাজ সহ অন্যান্য জিনিসের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। এবছর করোনা আবহে অনেকটাই ফিকে স্বাধীনতা দিবসের জৌলুস। তবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে মাস্ক বিলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে স্বাধীনতা দিবসকে পাখির চোখ করেই তেরঙা মাস্ক তৈরিতে ব্যস্ত এক শ্রেণির দর্জি ও কারিগরেরা।
এ বছর ইদের মতো পরবেও সেই অর্থে হাতে কাজ ছিল না দর্জিদের। ফলে হরিহরপাড়া, নওদার মতো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাতেও দর্জিরা এক প্রকার হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। অনেকে আবার করোনা আবহে মাস্ক তৈরি করেই দিন গুজরান করছেন। করোনা আবহে এবছর স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনেক প্রতিষ্ঠান, সংগঠন মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। অনেকেই বাছাই করছেন তেরঙা মাস্ক। ফলে দর্জি কারিগরদের কাছে এসেছে তেরঙা মাস্কের অর্ডার।
নওদার নওদার বাগাছাড়া এলাকার একটি প্রকল্পে জনা দশেক মহিলা বছরভর বিভিন্ন ধরনের পোশাক তৈরি করেন। করোনা আবহে ম্লান তাঁদের পোশাক তৈরির কারবার। ফলে প্রায় চার মাস ধরে তাঁরা মাস্ক তৈরি করছেন। বিভিন্ন সরকারি দফতর, অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও তাদের মাস্ক তৈরির বরাত দিয়েছে। তবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ বার তারা বিভিন্ন সংগঠনের তরফে তেরঙা মাস্ক তৈরির বরাত পেয়েছেন। দিনরাত এক করে মধুমিতা, ইয়াসমিন, সাবিনারা এখন ব্যস্ত তেরঙা মাস্ক তৈরিতে। মধুমিতা বেগম নামে ওই প্রকল্পের এক মহিলা কর্মী জানান, অন্য পোশাকের চাহিদা কম থাকায় মাস্ক তৈরি শুরু করি। বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্ডারও পেয়েছেন। তবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তেরঙা মাস্কের অর্ডারও পেয়েছেন কয়েকটি সংগঠনের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে মতিউর রহমান নামে আমতলা বাজার এলাকার এক দর্জিও করোনা আবহে মাস্ক তৈরি করে নিজের দোকান থেকেই বিক্রি করছেন। তৈরি মাস্কের চাহিদাও রয়েছে ভালই। তবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তেরঙা মাস্কের চাহিদা হতে পারে বলে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তিনিও তেরঙা মাস্ক তৈরি করতে শুরু করেছেন। মতিউর রহমান বলেন, " মাস কয়েক ধরে মাস্ক তৈরি করেই বিক্রি করছি। আর ক'টা দিন পরেই স্বাধীনতা দিবস। তাই তেরঙা মাস্ক তৈরি করছি। তেরঙা মাস্কের চাহিদাও রয়েছে। " বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়া বা কম বয়সীরা এই ধরনের মাস্ক কিনছেন। অনেকে আবার উপহার দেওয়ার জন্যও কিনছেন তেরঙা মাস্ক।
আমতলার বাসিন্দা সুজয় বিশ্বাস একাধিক সংগঠনের সাথে যুক্ত। এবছর ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মাস্ক বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরাও। বাগাছাড়ার ওই বেসরকারি প্রকল্পের মহিলাদের তেরঙা মাস্কের অর্ডার দিয়েছেন তিনিও। সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘এবছর সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে মাস্ক বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু স্বাধীনতা দিবস তাই তেরঙা মাস্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে।’’