তৈরি হচ্ছে গোকুল পিঠে। নিজস্ব চিত্র।
শীত কালের মধ্যে পৌষ মাসই প্রধান মাস। সারা মাস জুড়ে শীত। আর পৌষ মানেই পৌষ পার্বণ। পৌষ পার্বণ, পিঠে পুলি ছাড়া ভাবা যায় না। কিন্তু পিঠে পুলি তো আগের মা মাসিমাদের মত তৈরি করতে পারেন না নতুন প্রজন্ম। আর তৈরি করতে পারলেই বা কোথায় মিলছে ভাল নলেন গুড়। গ্রামে আগের শিউলিরাও নেই। কারণ নতুন প্রজন্ম আর এই পেশায় আসছেন না। এই সব না কে হ্যাঁ করার লক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছে নলেন গুড়ের ১৩ পার্বণ, গুড় ফেস্টিভ্যাল। তাকে নিয়ে মেতেছে পাহাড় থেকে সমুদ্র। রাজ্যের ৫২ টি মিষ্টির দোকানে এই উৎসব চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। মূলত শিউলিরা এই কাজ আর আগের মত করছে না। তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই কাজে নতুন করে কাজ করছে না। ফলে বৃদ্ধদের এই খেজুর গুড়ের রস সংগ্রহ করতে হচ্ছে। কিন্তু সেই মত পারিশ্রমিক পাচ্ছে না।
তাদের উৎসাহিত করতে ‘মিষ্টি উদ্যোগে’র এই প্রয়াস। দোকানে মিষ্টি বিক্রি হলে সেই শিউলিরাও উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাবেন। মিষ্টি উদ্যোগের রাজ্য সম্পাদক সম্রাট দাস বলেন, “শিউলিরা হল খেজুর গাছের ডাক্তার। কোন ডাল, কোন পাতা, কোন কাণ্ড কাটতে হবে তারা জানে। কিন্তু আগের মত পারিশ্রমিক তারা পাচ্ছে না। তাদের সাহা্য্য করতে ও নতুন প্রজন্মকে পিঠে পুলির বিষয়ে আগ্রহী করতে আমাদের এই পার্বণের আয়োজন। দার্জিলিং থেকে দক্ষিণে সাগর পর্যন্ত মোট ৫২ টি মিষ্টির দোকানে এই উৎসব পালিত হচ্ছে। আমাদের জেলাতেও এই উৎসব চলছে। বহরমপুর ও বেলডাঙার দুটো মিষ্টির দোকানে এই উৎসব চলছে।’’ বহরমপুরের লালদিঘি চত্তরের মিষ্টান্ন কারবারি বুবাই সাহা বলেন, “১ জানুয়ারি শুরু হয়েছে চলবে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এখানে নলেন গুড়ের গকুল পিঠে, পুলি, পাটি সাপটা, নলেন গুড়ের কাঁচা গোল্লা, নলেন গুড়ের কালাকাঁদ, নলেন গুড়ের রসের মিষ্টি তৈরি করে বিক্রি হচ্ছে। প্রচুর মানুষ এই পিটে, পুলি কিনছেন।”
বেলডাঙা ছাপাখানার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, “নলেন গুড়ের ১৩ পার্বণ, গুড় ফেস্টিভ্যাল আমাদের এখানে চলছে। এখানে গকুল পিঠে, পাটিসাপটা, পিঠে পুলি, দুধ পুলি সহ নলেন গুড়ের তালশাঁস, সন্দেশ, রসগোল্লা বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে এই মিষ্টি কেনা নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে।”