সুশান্ত ও সুতপার বাড়িতে যায় তদন্তকারী দল। ফাইল চিত্র।
বহরমপুরের ছাত্রী খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে জেরা করে বহু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এখন সকলের বয়ান নিয়ে চার্জশিট পেশ করাই তদন্তকারীদের লক্ষ্য। সেই উদ্দেশ্যে সুশান্তকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলেও কোনও কথা বলতে চাইল না বহরমপুর ছাত্রী খুনে মূল অভিযুক্ত। সুশান্ত তদন্তকারীদের জানায়, তার কেউ নেই। কারও সঙ্গে বলার মতো কোনও কথাও তার নেই।
বহরমপুর কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর খুনের ঘটনায় ধৃত সুশান্তকে দশ দিন পুলিশি হেফাজতের শেষে বৃহস্পতিবার পুনরায় আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তকারীদের তরফে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হলেও বিচারপতি তার দু’দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন। অন্য দিকে, এখনও তদন্তের কাজ অনেকটা বাকি বলে জানান আধিকারিকরা। আপাতত বহরমপুর কেন্দ্রিক সমস্ত তদন্ত শেষ হলেও মালদহের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে প্রথম থেকেই বলে আসছেন তাঁরা। হাতে সময় মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। তার মধ্যে শেষ করতে হবে সুশান্তকে নিয়ে মালদহের তদন্ত-পর্ব। তাই কালবিলম্ব না করে আদালত থেকে বেরিয়ে সুশান্তকে নিয়ে মালদহের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তদন্তকারীদের একটি দল।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ মালদহের ইংরেজবাজারে পৌঁছন তদন্তকারীরা। প্রথমে যাওয়া হয় সেই বাজারে, যেখান থেকে সুশান্ত খেলনা বন্দুক ও ছুরি কিনেছিল। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কোন দোকান থেকে সে বন্দুক কিনেছিল। সুশান্তও নাকি সময় না নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে দেখিয়ে দেয় ওই দোকান। এর পর ওই দোকান-মালিককে দীর্ঘক্ষণ জেরা করে পুলিশ। শেষে তদন্তকারী দল রওনা দেয় সুতপার বাড়ির উদ্দেশ্যে। কথা হয় সুশান্তর বাবার সঙ্গেও।
সেখান থেকে সুশান্তকে নিয়ে যাওয়া হয় তার পিসির বাড়ি, যে বাড়িতে থাকার সুবাদে সুতপার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সুশান্তর। সুশান্তের পিসি প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন যে, সুতপার কাছে প্রতারিত হয়েছে তাদের ছেলে। ওই বাড়িতে গিয়ে যদিও কারও দেখা পাওয়া যায়নি। তদন্তকারীরা দেখেন, বাড়ির দরজায় একটা বড় তালা ঝুলছে। অনেক ডাকাডাকি করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, সুশান্তকে তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু সে প্রস্তাব খারিজ করে দেয় সুশান্ত। সুশান্ত জানায়, তার কেউ নেই। কারও সঙ্গে সে কথা বলতে চায় না। তদন্তকারীদের কাজ হয়ে গেলে যেন তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। দু’একজন প্রতিবেশী অবশ্য সুশান্তের সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সে কারও দিকে তাকায়নি বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এর পর সুশান্তকে নিয়ে ফিরে আসা হয় ইংরেজবাজারে। সেখানে একটি হোটেলে তাকে রাতের খাবার খাইয়ে থানায় রওনা দেয় পুলিশ।