এক যুব পরে ফের মিড ডে মিলের স্বাদ। — ফাইল চিত্র।
এক যুগ ধরে নানা কারণে মিড ডে মিল বন্ধ ছিল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুলতানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শনিবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মিড ডে মিল চালু হল। বিদ্যালয়ে এখন ২২৯ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে।
ভগবানগোলা-১ ব্লক আধিকারিক পুলককান্তি মজুমদার বলেন, “ভগবানগোলা-১ ব্লকে প্রায় চার হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। সেখানে বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৭৫। সব গোষ্ঠী যদি রান্নার বরাত চেয়ে বসে, সেটা মেনে নেওয়া কার্যত অসম্ভব।’’
এই বিদ্যালয়টি ঘিরে আরও অশান্তি তৈরি হয়েছিল। ব্লক আধিকারিক বলেন, ‘‘নানা কারণে স্কুলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আইন-শৃঙ্খলারও অবনতি হয়। তখন পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মিড-ডে মিলের রান্না বন্ধ রাখা হয়।’’ তিনি মেনে নেন, প্রায় এক যুগ ধরে তা বন্ধই ছিল।
তাঁর কথায়, ‘‘শনিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে পুনরায় মিড-ডে মিল চালু করা সম্ভব হয়েছে।” এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির তরফে কেউ মন্তব্য করতে চাননি।শুক্রবার রান্নার বাসনপত্র কিনে দেন ব্লক কর্তৃপক্ষ। এ দিন নানা রকমের আনাজ দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানো হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রেই খবর, মিড ডে মিল দেওয়া হয় না বলে অনেক ছাত্রছাত্রী এই স্কুলটি ছেড়ে অন্যত্র ভর্তি হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শঙ্কর বেসরা বলেন, “দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে স্কুলে শিক্ষকতা করছি। বহু বার এই সমস্যার মেটাতে চেয়েছি। রান্নার বরাত পাওয়া নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে মত-বিরোধের কারণে মিড-ডে মিল বন্ধ রাখা হয়েছিল।”
মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কামরুনাহার বিবির কথায়, “পঞ্চায়েত স্তরেও বহু দিন ধরে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হয়েছে।’’তবে এক যুগ মিড-ডে বন্ধ থাকার পরেও জেলা প্রথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক নৃপেন সিংহ বলেন, “এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান আশিস মার্জিতেরও একই বক্তব্য।
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, “ঘটনা সম্পর্কে দিন পনেরো আগে খবর পাই। পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সেখানে শনিবার থেকে ফের মিড-ডে মিলের রান্না করে ছাত্রছাত্রীদের খাবার দেওয়া হচ্ছে।”