প্রতীকী ছবি।
পথে নেমেই ‘আজাদি’ চাইলেন ওঁরা। কিসের আজাদি? সমস্বরে উত্তর এল, ‘‘এনআরসি থেকে আজাদি, সিএএ থেকে আজাদি, ভয় থেকে আজাদি।’’ ওঁরা খালিদা বেগম, রেশমা বেওয়া, রিজিয়া বিবি নাসরিন খাতুনেরা।
ওঁদের কেউ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা, কেউ ছাত্রী, কেউ আবার দিনরাত ব্যস্ত থাকেন সংসার, হেঁশেল নিয়েই। রবিবারের মিছিলে তাঁরা সকলেই বেরিয়ে পড়েছিলেন এনআরসি, সিএএ বিরোধী প্ল্যাকার্ড ও জাতীয় পতাকা নিয়ে।
মিছিলটা শুরু হয়েছিল কাটাকোপরার খিদিরপাড়া মাদ্রাসা থেকে। প্রথমে মিছিল যায় কুঠিরমোড়ে। সেখান থেকে মোক্তারপুর হয়ে দশ কিলোমিটার পথ হেঁটে ফের মাদ্রাসায় ফেরে মিছিল। মিছিলের বেশিরভাগ সদস্যই ছিলেন মহিলা। নাগাড়ে তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন— ‘এআরসি, সিএএ, এনপিআর মানছি না, মানব না। হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই, ভারতে একসঙ্গে থাকতে চাই।’
পথচলতি লোকজন প্রথমে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছিলেন। এলাকার প্রবীণেরা জানাচ্ছেন, মহিলাদের এমন মিছিল তাঁরা আগে কখনও দেখেননি। রিজিয়া বিবিও কখনও ভাবেননি তিনিও কখনও মিছিলে পা মেলাবেন। এ দিন তাঁর বাড়ির সামনে দিয়েই এগোচ্ছিল মহিলাদের ওই মিছিল।
রিজিয়া বলছেন, ‘‘চারপাশে কী চলছে, বলুন তো! বাড়ির পুরুষ মানুষেরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিনরাত নথিপত্র খুঁজে বেড়াচ্ছে। এই সময় কি আর ঘরে বসে থাকলে চলে! তাই আমার মতো বহু মহিলাকে মিছিলে হাঁটতে দেখে আমিও ওঁদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম।’’
কাটাকোপরা খিদিরপাড়ার ওই বেসরকারি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা খালিদা বেগম বলছেন, ‘‘কেন্দ্রের সরকার যা শুরু করেছে তা ভারতের ঐতিহ্য নয়। আর সরকারের এই নানা সিদ্ধান্তের কারণে গোটা দেশ জুড়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আমরা এ সব থেকে আজাদি চাই। আমরা চাই, সম্প্রীতি বজায় রেখে সকলেই এ দেশে শান্তিতে বাস করুক।’’