শ্যামরায় কালী। গোকর্ণে।
তখনও গ্রামে কালী পুজোর তেমন চল ছিল না। হয় জঙ্গলে না হয় বনে-বাদারে কালীর পুজো হত।
এই ঘটনার সময়কাল ঠিক জানা যায় না। লোক মুখে প্রচলিত, এলাকার জমিদার হট্টেশ্বর রায় গোকর্ণে প্রথম কালীপুজো শুরু করেন। তবে গ্রামের মধ্যে নয়। জনপদের বাইরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শ্মশান কালীর। কথিত আছে, পরবর্তী কালে মা কালী স্বপ্ন দেন, তাঁকে গ্রামেই প্রতিষ্ঠা করা হোক। সেই থেকে গ্রামে কালী পুজোর শুরু। বর্তমানে গ্রামে ৪৫টি কালী পুজো হয়।
এলাকার বাসিনন্দারা জানান, ওই গ্রামের পূর্বদিকে দ্বারকা নদীর শাখা নদীর পাশে ঘোষকুড়ো পুকুরের ধারে হট্টেশ্বর শ্মশানকালীর প্রতিষ্ঠা করেন। তখন ওই কালী হট্টরায় কালী নামে পরিচিত ছিল। ওই কালী প্রতিমা গ্রামের বাইরে থাকার কারণে ওই পুজোর বেদি অচ্ছুত হয়ে যায় বলে দেবীকালী ওই হট্টেশ্বর রায়ের বংশধর শ্যামাচরণ রায়কে স্বপ্নে জানান। স্বপ্নাদেশে দেবী জানান, শ্মশান থেকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন।
শ্যামাচরণ রায় গ্রামের পাঁচপাড়ায় ওই কালীকে পুনঃপ্রতিষ্টা করেন। পরবর্তীকালে শ্মশান কালীর নাম পরিবর্তন হয়ে শ্যামরায় কালী নামে পরিচিত হয়। গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, ওই পুজোর বয়স প্রায় চারশো বছর। বর্তমানে স্থায়ী মন্দিরে ওই পুজো হয়। দীপান্বিতা অমাবস্যায় প্রতিমা গড়ে পুজো হলেও সারাবছরই নিত্যপুজো হয়।
২৮ বছর আগে কংক্রিটের মূর্তি তৈরি করা হয়। বর্তমানে সেই মূর্তিতেই পুজো হয়। পুজোর দিন সকাল থেকেই মায়ের ভোগ শুরু হয়। সকালে পাঁচ রকমের ফল ও মিষ্ঠি সঙ্গে সুজির পায়েস দিতে হয়। দুপুরে লুচি সঙ্গে পাঁচ ফল ও সুজির পায়েস। রাতে প্রধান পুজোতে দেবীর নিজস্ব পুকুর থেকে মাছ ধরে ওই মাছ ভাজা, গোটা মটর ভাজা, ছোলা ভাজা, বাদাম ভাজা সাথে বেগুন ভাজা, ভাত, পাঁচটি সব্জি দিয়ে ভোগ দিতে হয়। সঙ্গে থাকে কারণবারি। পুজোতে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়।
ওই মন্দিরের বর্তমান সেবায়েত লক্ষণ মুখোপাধ্যায় ও পার্থ মুখোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘প্রতি বছর শতাধিক পাঁঠাবলি হয়। ভিন জেলা থেকেও ভক্তরা পাঁঠা নিয়ে আসেন বলি দেওয়ার জন্য।