স্বস্তি: বাজার ছেয়েছে ইলিশে। বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
নিজস্ব প্রতিবেদন
সুখবরের ইঙ্গিতটা মিলেছিল কয়েক দিন আগেই। প্রাক-বর্ষার ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে সাগর থেকে ফেরা ট্রলারগুলি যে ‘জলের রুপোলি শস্য’ ভর্তি করে কাকদ্বীপ, দিঘার মোহনায় একে একে নোঙর করছে, সেই খবর মিলতেই বোঝা গিয়েছিল, জামাইষষ্ঠীতে বাজারে ইলিশ পর্যাপ্ত মিলতে চলেছে। সেই ইঙ্গিত হুবহু মিলে গেল।
আজ, বুধবার জামাইষষ্ঠী। তার আগের দিন মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন বাজারে ইলিশের ঢল নামল। অধিকাংশ বাজারেই দাম ছিল মোটামুটি নাগালের মধ্যেই। বড় মাপের ইলিশের দাম ছিল কেজি প্রতি ১,৪০০-১,৮০০ টাকার মধ্যে। রেস্ত কিছুটা খসলেও জামাইদের পাতে ইলিশ তুলে দিতে পারবেন ভেবে স্বস্তিতে শ্বশুর-শাশুড়িরা। ইলিশ মেলায় ‘মুখরক্ষা’ হয়েছে গিন্নিদেরও। ইলিশের পাশাপাশি এদিন বিভিন্ন বাজারে প্রচুর পরিমাণে গলদা চিংড়িরও জোগান ছিল। ভিন রাজ্য থেকে চালান হয়ে আসা চিংড়ির দাম কিছুটা কম থাকলেও, গঙ্গা ও পদ্মার চিংড়ির দাম ছিল বছরের অন্য সময়ের চেয়ে বেশ কিছুটা বেশি, ৯০০-১,০০০ টাকা প্রতি কেজি। দু’ থেকে চার কেজির রুই, কাতলা মাছের দাম ছিল ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা প্রতি কেজি।
জেলার বহরমপুর, খাগড়া, ধুলিয়ান, কান্দি, লালবাগ, জিয়াগঞ্জ— সব জায়গার বাজারের চিত্রটাই এদিন ছিল প্রায় একই। তবে মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আজ, বুধবার জামাইষষ্ঠীর সকালে ইলিশ ও চিংড়ির দাম প্রতি কেজিতে গড়ে প্রায় ১০০ টাকা বাড়তে পারে। গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে ইলিশের জোগান সেভাবে ছিল না। যে সব মাছ মিলছিল তার দামও ছিল ৯০০ থেকে ১,৪০০ টাকা প্রতি কেজি। কিন্তু মঙ্গলবার জেলার সব বাজারই ইলিশে ছেয়ে যায়। বড় মাছের পাশাপাশি চারশো, পাঁচশো গ্রাম ওজনের মাছও ছিল। ছোট মাপের ইলিশ রঘুনাথগঞ্জের বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। বেলডাঙার বাজারে ওই ওজনের ইলিশের দাম ছিল ৬৫০ টাকা প্রতি কেজি। কান্দির বাজারে দাম ৭০০ টাকা। বহরমপুরে ছোট ইলিশ (চালানি) বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকা প্রতি কেজি। বড় ইলিশ ৯০০ থেকে ১,০০০ টাকা। গঙ্গার বড় ইলিশ বিকিয়েছে দেড় হাজার টাকায়। ধুলিয়ান বাজারে ছোট ইলিশের দাম ছিল ৭০০ টাকা কেজি। বড় ইলিশ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১,৪০০ টাকায়। জিয়াগঞ্জ ও লালবাগে ছোট (চালানি) ইলিশের দাম ছিল ৬০০ টাকা কেজি। কান্দিতে ছোট মাপের ইলিশের জোগান ছিল কম। যা ছিল তা- বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকায়। বড় মাপের ইলিশ ১, ৪০০ টাকা। সুতির জেহেলিনগরের বাসিন্দা শ্রাবণী দাস এদিন বলছিলেন, ‘‘কাল সকালে মেয়ে-জামাই আসবে বাড়িতে। জামাই মাংস খেতে পছন্দ করে না। মেয়ে আলাদা করে ফোন করে মেনুতে ইলিশ রাখার কথা বলে দিয়েছে। সকাল থেকেই টেনশনে ছিলাম, ইলিশ বাজারে মিলবে কি না তাই ভেবে। মুখরক্ষা হল।’’