ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।
এক যুগ আগে বহরমপুর বাইপাস রাস্তার কাজ শুরু করেছিল জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু জমিজট সহ নানা কারণে থমকে ছিল সেই রাস্তার কাজ। ২০১৫ সালে জেলা প্রশাসন সেই জমি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে অধিগ্রহণ করে দিলেও সেই জমিতে অনেকে চাষ করছিল। এ বারে সেই চাষের ক্ষতিপূরণ দিয়ে চাষিদের রাস্তার জমি থেকে সরিয়ে দিল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জাতীয় সড়কের নির্মাণ কাজে যুক্ত এজেন্সি কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ বিঘা প্রতি ১৪ হাজার টাকা করে তুলে দিয়েছে। শতাধিক কৃষক সেই টাকা নিয়েছেন। যার জেরে রাস্তার কাজে আর বাধা রইল না।
এ দিন বহরমপুরের আধারমানিক প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে ফসলের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ খলিলুর রহমান, নবগ্রামের বিধায়ক কানাই চন্দ্র মণ্ডল, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এ দিন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বলেন, ‘‘ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ কৃষকদের হাতে এ দিন টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে জাতীয় সড়কের বাইপাস রাস্তা তৈরির কাজে আর সমস্যা থাকল না।’’ নবগ্রামের বিধায়ক কানাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কৃষকদের যেমন বোঝানো হয়েছে, তেমনই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। বহরমপুর ব্লকের সাহাজাদপুর ও রাধারঘাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় আড়াইশো কৃষক জাতীয় সড়কের অধিগৃহীত জমিতে চাষ আবাদ করছিল। এ দিন তাঁদের ফসলের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জাতীয় সড়কের বাইপাস রাস্তার কাজের জন্য জমিও ছেড়ে দিয়েছেন।’’
জাতীয় সড়কের মালদহ ডিভিশনের প্রকল্প আধিকারিক দীনেশ হংসরিয়া বলেন, ‘‘২০১৫ সালে জেলা প্রশাসন জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের দিয়েছে। ওই জমিতে যাঁরা চাষ করছিলেন তাঁদের ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছু টাকা চাষিদের দিয়েছে নির্মাণ কাজে যুক্ত থাকা এজেন্সি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা বাইপাস রাস্তার জমি পেয়েছি। রাস্তা ও সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে বহরমপুর বাইপাশ রাস্তার কাজ শেষ করা হবে।’’
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বহরমপুর শহরকে দু’ভাগ করে দিয়েছে। এ ছাড়া শহরের বুক চিরে, জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে শিয়ালদহ-লালগোলা রেলপথ। এমনিতেই শহরের ভিতরে মোহনা বাস টার্মিনাস থাকার কারণে ও জেলা সদর হওয়ার কারণে যানজট রয়েছে। তার উপরে শহরের উপর দিয়ে জাতীয় সড়ক ও রেলপথ যাওয়ায় যানজট আরও বেশি হয়। এ ছাড়া পঞ্চাননতলা রেলগেট থেকে বাস টার্মিনাস পর্যন্ত যে রাস্তাটির উপর দিয়ে জাতীয় সড়কের যানবাহন চলাচল করে সেটি আদতে বহরমপুর পুরসভার। সেই রাস্তায় পুরসভা টোলগেট বসিয়েছে। ফলে যানজটে নাকাল হন শহরবাসী। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় সড়কে সম্প্রসারণের সময় ২০০৯ সালে বহরমপুর শহরকে এড়িয়ে বাইপাস রাস্তার পরিকল্পনা করে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বহরমপুর শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বলরমাপুরে জাতীয় সড়ক থেকে বাইপাস রাস্তার শুরু হওয়ার কথা।