Kho kho Players Injured

মাঠ দখলে ‘দাদাগিরি’, খেলোয়াড়দের মারধরের নালিশ

রানাঘাট শহরে রেলের পূর্ব পাড়ে রয়েছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানে ৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৬০ মিটার প্রস্থের একটি মাঠ রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫১
Share:

এই মাঠেই চলে খো-খো অনুশীলন। তুলে ফেলা হয়েছে পোল। সোমবার। ছবি: সুদেব দাস।

মাঠে থাকা খো-খো খেলার কোর্ট থেকে উপড়ে ফেলা যাবে না পোল। প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হতে হল জাতীয় ও রাজ্যস্তরের খো-খো খেলোয়াড়দের।

Advertisement

রবিবার বিকেলে রানাঘাটে এই ঘটনায় শহরজুড়ে শোরগোল পড়েছে। রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জাতীয় স্তরের খো-খো খেলোয়াড় ও আক্রান্ত মৌমিতা সরকার। ঘটনার তদন্তে নেমে সোমবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত বাবুলাল মিত্র ও কার্তিক বল নামে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, মারধর, অশান্তি ও সংগঠিত অপরাধের মতো একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে। কয়েক জনের খোঁজে বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়েছে।

রানাঘাট শহরে রেলের পূর্ব পাড়ে রয়েছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানে ৮০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৬০ মিটার প্রস্থের একটি মাঠ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই মাঠে প্রতিনিয়ত খো-খো খেলার অনুশীলন হয়ে আসছে। এই মাঠ থেকেই উঠে এসেছেন জাতীয় ও রাজ্যস্তরের অনেক খেলোয়াড়। অভিযোগ, মাঠের পাশে থাকা একটি ক্লাবের তরফে বেশ কিছুদিন ধরে মাঠ দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে। রবিবার বিকেলে এলাকার ছেলেমেয়েরা ওই মাঠে খো-খো অনুশীলন করছিল। সেই সময় ক্লাবের সম্পাদক বাবুলাল দলবল নিয়ে খুদে খেলোয়াড়দের ওপর চড়াও হয়। উপড়ে ফেলা হয় মাঠে থাকা তিনটি কোর্টের ছটি পোল। খেলোয়াড়েরা তাতে বাধা দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। সেই সময় মাঠে ছিলেন জাতীয় দলের খেলোয়াড় মৌমিতা সরকার ও সদ্য ন্যাশনাল গেমসে বাংলা দলের হয়ে অংশ নেওয়া খো খো খেলোয়াড় বিক্রম শীল।

Advertisement

মৌমিতা বলেন, "কী কারণে কোর্ট থেকে পোল তোলা হচ্ছে, জানতে চাওয়া হলে ওরা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বাধা দিলে মারধর পর্যন্ত করা হয়েছে।"

নদিয়া জেলা খো-খো অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজনকুমার দাস বলেন, "খো-খো রাজ্যের জাতীয় খেলা। এই মাঠ থেকে বহু খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে। অনুশীলনে এসে এই ধরনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে খেলোয়াড়েরা, এটা ভাবাই যায় না। আমাদের পক্ষ থেকেও বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।" এর পাশাপাশি ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ওই ক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক সৌভিক দাস লিখিত ভাবে পদত্যাগ করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, যে ক্লাবকে সামাজিক কর্মসূচির দায়িত্ব কাঁধে নিতে হয়, যে ক্লাব বছর বছর সরকারি অনুদান নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে সেই ক্লাবের সম্পাদকের নেতৃত্বে এমন ঘটনা ঘটে কী ভাবে?

রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পুরসভার মাঠে খো-খো খেলাই হবে। মাঠের ব্যাপারে ক্লাব কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারে না। খেলোয়াড়দের মারধরের তীব্র ধিক্কার জানাই। রানাঘাটে এই ধরনের ঘটনা কখনওই বরদাস্ত করব না।"

সোমবার বিকেলে মাঠে গিয়ে দেখা গেল, খুদেরা অনুশীলনের এসে হাজির হয়েছো। কিন্তু আতঙ্কে কেউই মাঠে নামতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত প্রশিক্ষকের আশ্বাসে শুরু হয় অনুশীলন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement