রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেও শাসক দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন মুকুলের তেমন যোগ নেই। ফাইল ছবি।
এমনিতেই এলাকায় তিনি দীর্ঘদিন ‘ভ্যানিস’ হয়ে ছিলেন। শেষে ম্যাজিকের মতো সবার অলক্ষে মুকুল রায়ের দিল্লি যাত্রায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগর উত্তরে।
দীর্ঘ দিন নদিয়া জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন মুকুল রায়। একটা সময় তিনিই ছিলেন এই জেলার শেষ কথা। কৃষ্ণনগরকে বলা হত তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। কিন্তু বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকে এই জেলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ক্রমশ হালকা হতে থাকে। বিজেপি তাঁকে কৃষ্ণনগর-উত্তর কেন্দ্রের প্রার্থী করলেও সে ভাবে প্রচারে তাঁকে দেখা যায়নি। এমনকি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর হাতে গোনা কয়েক বার তিনি কৃষ্ণনগরে এসেছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরে এই শহরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেও শাসক দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন তাঁর তেমন যোগ নেই। তাঁকে নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের এলাকায় অস্বস্তিতেও পড়তে হয়েছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। বিধায়কের না থাকাটা বিরোধীরা প্রচারের বিষয় করতে চাইবে, সেটা ভাল করেই বুঝতে পারছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এরই মধ্যে সিপিএম সরাসরি দাবি করতে শুরু করেছে যে, নিজেকে ও ছেলেকে বাঁচাতেই মুকুলের এই দিল্লি যাত্রা। সিপিএমের দাবি, বিজেপির সঙ্গে আবার নতুন করে কোনও আঁতাত করতেই দিল্লি ছুটেছেন মুকুল। তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও অনেকে আশঙ্কা করছেন যে, তিনি আবার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন।
সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাসের কথায়,“এ বার মুকুল রায় তাঁর ছেলের পাশাপাশি তৃণমূল দলকে বাঁচাতেই দিল্লি গিয়েছেন। তৃণমূল তাঁকে দূত হিসাবে দিল্লি পাঠিয়েছে। মুকুলের মাধ্যমে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে আবারও কোনও চুক্তি হতে চলেছে।” তাঁর কথায়, “মুকুল রায় অসুস্থ বলে নির্বাচন কেন্দ্র কৃষ্ণনগরে আসতে পারেন না। কিন্ত দিল্লি ছুটতে পারেন!মানুষ সব বুঝতে পারছে।”
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বক্তব্য, “মুকুল রায়কে নিয়ে এই মুহুর্তে কোনও মন্তব্য করব না। তবে অনেক আশা নিয়ে কৃষ্ণনগরের মানুষ তাকে জিতিয়েছিলেন। কৃষ্ণনগরে তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় মানুষ হতাশ।” তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা কমিটির চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেছেন,“মুকুল রায়ের বিষয়ে যা বলার রাজ্য নেতৃত্ব বলবে। তবে এটা বলতে পারি যে, পঞ্চায়েত ভোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।”