উদ্ধার মাদক। ফাইল চিত্র
সীমান্ত পাচারে কাশির সিরাপ ফেন্সিডিলের রমরমায় উদ্বিগ্ন বিএসএফ। প্রায় প্রতিদিনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের হাতে যে হারে ফেন্সিডিল ধরা পড়ছে, বিএসএফ কর্তারা ভেবে পাচ্ছেন না জেলায় তার এত জোগান আসছে কোথা থেকে?
এমনকি, ফেন্সিডিল পাচারে বিরতি ছিল না দুর্গাপুজোর দিনগুলিতেও। শনিবার মহাষ্টমীর রাতেও কাকমারি চরের সীমান্তে ১৩২০ বোতল ফেন্সিডিল আটক করেছে বিএসএফ, যা পাঁচটি বড় বস্তায় ভরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বাংলাদেশে। ফেন্সিডিলের এই পাচার নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় বিএসএফ একাধিক এফআইআরও দায়ের করেছে ধৃত পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। এমনকি, বিএসএফের কাছে ধৃতদের জবানবন্দি মতো এই ফেন্সিডিল পাচার চক্রে জড়িতদের বিস্তারিত তথ্যও জানানো হয়েছে পুলিশকে। কিন্তু তারপরও বন্ধ হয়নি ফেন্সিডিলের আনাগোনা।
সীমান্তে ফেন্সিডিলের সব চেয়ে বড় ঘাঁটি মুর্শিদাবাদ। তার পরেই মালদহ। গত সাড়ে ৯ মাসে দক্ষিণবঙ্গে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ফেন্সিডিল ধরা পড়েছে ২.৪৯ লক্ষ বোতল। এর মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই ধরা পড়েছে এই দুই জেলায়। মুর্শিদাবাদে মূলত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে মালদহ সেক্টরের ৭৮ নম্বর ব্যাটেলিয়ান ও বহরমপুর সেক্টরের একাধিক ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানরা। গত দু’সপ্তাহে শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদ থেকে সীমান্তে আটক হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার বোতল ফেন্সিডিল। বিএসএফের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ফেন্সিডিল একটি নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। যাতে রয়েছে মাদকের নানা মিশ্রণ। সরকারি ভাবে এই ধরনের সিরাপের বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও তা এখনও বিক্রি হয় বাজারে। ওষুধের দোকানগুলি থেকে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে।
এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদের ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের সহকারী অধিকর্তা সুভাষ মণ্ডল জানান, এখনও বাজারে প্রেসক্রিপসন মত ফেন্সিডিল বিক্রি নিষিদ্ধ নয়। তবে বেচাকেনায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিধি-নিষেধ যাই থাক বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যে মাদক হিসেবে চড়া দাম রয়েছে ফেন্সিডিল জাতীয় কাশির সিরাপের। তাই বাংলাদেশে পাচারের পথে প্রায় প্রতিদিনই এ জেলার সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের হাতে ধরা পড়ছে ফেন্সিডিল। কিন্তু তাতেও পাচারের রমরমা বন্ধ করা যায়নি।