কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে থেকে দেওয়া হচ্ছে খাবার। নিজস্ব চিত্র
এ যেন এক অচেনা, অন্য শ্রীপুর গ্রাম। যে গ্রামে সকাল হলেই চাষের কাজে বেরিয়ে পড়তেন গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা। কেউ গোয়াল ঘর থেকে গরুকে খাবার দিয়ে দুধ সংগ্রহ করে তা পৌঁছে দিতেন পাড়ার দুধ সমিতির ক্রয় কেন্দ্রে। সকাল হলেই খুলে যেত পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকান, মুদি দোকান। কিন্তু বিগত তিন দিন ধরে ভোল পাল্টে গিয়েছে গ্রামের। গ্রামে চার জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়তেই হরিহরপাড়ার শ্রীপুর নামুপাড়া গ্রামকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ফলে বুধবার সকাল থেকেই শুনশান গোটা শ্রীপুর নামুপাড়া গ্রাম। গ্রামের বাসিন্দারা স্থির করেছেন, আর ভুল নয়। গ্রাম করোনা মুক্ত করতেই হবে।
দোকান খোলা বা অন্যান্য কাজ কর্ম তো দুর অস্ত্ বাড়ির বাইরে বেরোতেও বারণ রয়েছে প্রশাসনের। গ্রামের মুল রাস্তা বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। শ্রীপুর গ্রামে প্রতি সোমবার বসে সাপ্তাহিক গ্রামীণ হাট। আগামী সপ্তাহে তা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। গ্রামের অধিকাংশ চাষি আনাজ চাষ করে থাকেন। শুক্রবার ও মঙ্গলবার পাশের গ্রামে চোঁয়া হাটে তা বিক্রির জন্য নিয়ে যান। এখন খেতেই নষ্ট হচ্ছে পরিণত পটল, ঢেঁড়শ, বেগুন সহ অন্যান্য আনাজ। তাছাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের হাট-বাজার তিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সমিতিও গ্রামের দুধ কেনা বন্ধ করেছে। নষ্ট হচ্ছে গরুর দুধ। গ্রামের বাসিন্দা রাকেশ মণ্ডল বলছেন, ‘‘খেতের কাজের ভরা মরসুম সব পিছিয়ে গেলো।’’ তবে, দ্বিতীয় বার ভুল করতে চাইছে না শ্রীপুর।
ফলে সম্পুর্ণ ভাবে প্রশাসনের নির্দেশ মত বাড়ির বাইরে থেকে বের হচ্ছেননা কেউই। গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাঁরা চাল, ডাল, আলু, সর্ষে তেল, সয়াবিন, মাস্ক, সাবান পৌঁছে দিয়েছেন শ্রীপুর গ্রামে।