নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। ছবি: ফেসবুক।
প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা রাজনৈতিক নেতা নভজ্যোৎ সিংহ সিধু পাঁচ মাসে ৩৩ কেজি ওজন কমিয়েছেন। ষাটোত্তীর্ণ সিধু সমাজমাধ্যমে নিজের শারীরিক পরিবর্তনের ছবি দিয়েছেন। একটি ওজন কমানোর আগে, একটি পরে। প্রথম ছবিটিতে সিধুর চেহরায় মেদের বাহুল্য স্পষ্ট। তাঁর পেটের চর্বি দৃশ্যমান। দ্বিতীয় ছবিতে পেটের চর্বি উধাও। তাঁকে বেশ ঝরঝরেও দেখাচ্ছে। পাশাপাশি দু’টি ছবি দিয়ে সিধু সমাজমাধ্যমের পাতায় লিখেছেন, “পেহলা সুখ নিরোগী কায়া” অর্থাৎ নিরোগ শরীরই সবচেয়ে বেশি সুখের।
সিধুর বয়স এখন ৬১। ওই বয়সে পৌঁছে ৩৩ কেজি ওজন কমানো নেহাত মুখের কথা নয়। সিধু অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি তাঁর নতুন ‘কায়া’ লাভ করেছেন ইচ্ছেশক্তির জোরে। সিধুর কথায়, ‘‘গত অগস্ট মাস থেকে নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করেছি, প্রাণায়াম করেছি, ওয়েট ট্রেনিং করেছি আর হেঁটেওছি।’’ অর্থাৎ, গত পাঁচ মাসের ওই পরিশ্রমই সিধুর ৩৩ কেজি ওজন ঝরানোর গোপন কথা। সিধু তাঁর অনুরাগীদের জানিয়েছেন, ধৈর্য থাকলে আর ইচ্ছেশক্তির জোর থাকলে অসম্ভব বলে কিছু হয় না। কিন্তু ৬০ বছরের পর শরীরের ৩৩ কেজি ওজন ঝরানোর কি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে?
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
বেশি বয়সে ওজন ঝরানো কি স্বাস্থ্যকর?
ডায়াবিটিসের চিকিৎসক রাজীব কোভিল বলছেন, ‘‘যে কোনও বয়সেই ওজন ঝরানো যেতে পারে। তবে তার প্রক্রিয়াটি হতে হবে যথাযথ। প্রয়োজনীয় পুষ্টিগ্রহণ, জীবনযাপনে বদল আনার পাশাপাশি পেট এবং পেটের নীচের পেশির শক্তি বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে।’’
বেশি বয়সে ওজন ঝরানো চেষ্টা কি কষ্টকর?
বেশি বয়সে ওজন ঝরানো যে কঠিন, তা মানছেন চিকিৎসকও। রাজীব বলছেন, ‘‘বয়স বাড়লে, বিশেষত ৫৫ বছরের পর পুরুষ এবং মহিলা— উভয়েরই হরমোনে বদল আসে। হাড় এবং পেশির স্বাস্থ্যেও নানা রকম পরিবর্তন হয়। তাই ওজন কমানো একটু কঠিন হয়ে পড়ে। যদি কেউ কম খান তখন দেখা যায় মস্তিষ্ক বিপাকহারের পরিমাণও কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে তাতে লাভ হচ্ছে না। তাই সব দিক বজায় রেখে শারীরিক কসরতের মাধ্যমেই ওজন ঝরানো কার্যকরী।’’
কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে?
স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া: খাবারে প্রোটিন এবং ফাইবারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। চিনি, ময়দা এবং অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খেয়ে বেশি করে খেতে হবে তাজা ফল, সব্জি, ডাল, ওট্স, ডালিয়া, বাদাম এবং দানাশস্য।
শারীরিক কসরত: পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এমন শরীরচর্চা করতে হবে। কার্ডিও এবং হাঁটা বা সাঁতার কাটার মতো কোনও শারীরিক কসরত নিয়মিত করতে হবে।
খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: যখনই খাবেন অল্প পরিমাণে খান, তবে পুষ্টিকর খাবার খান, বলছেন চিকিৎসক। অধিক রাতে এটা-ওটা খাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকেরই। কেউ মিষ্টি খান, কেউ খান নোনতা বা ঝাল কিছু। সেই অভ্যাস ছাড়তে হবে।
ছবি: আইস্টক।
ঘুম এবং মানসিক স্বাস্থ্যে নজর: বিশ্রামে জোর দিন। কর্মক্ষেত্রের যে চাপ বা মানসিক চাপ কম রাখার চেষ্টা করুন। রাতের ঘুমের সঙ্গে আপস না করাই ভাল।
নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা: ভাল থাকার জন্য নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করান। কারণ অন্যান্য শারীরিক কারণেও ওজন বাড়তে পারে বা ওজন কমাতে সমস্যা হতে পারে। কারণ জানা থাকলে, তার নিরাময় করা সম্ভব হবে।