ইউসুফ পাঠান। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরের দিন বহরমপুর ছেড়ে গিয়েছেন বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা ইউসুফ পাঠান। তার পর থেকে তিনি বহরমপুরমুখী হননি। সবে লোকসভার অধিবেশন শেষ হয়েছে। ফের অধিবেশন বসবে। অন্যদিকে এখন ইংল্যান্ডে সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ খেলতে ব্যস্ত ইউসুফ পাঠান। যা নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে বহরমপুরে। সমাজ মাধ্যমেও নানা মন্তব্য ধেয়ে আসছে। শাসকদলের অন্দরে যেমন তাঁর বহরমপুরের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তেমনই বিরোধীরাও নানা প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেছে, এমনটা যে হবে তাঁরা ভোটের সময় জনগণকে বলেছিলেন। আর ইউসুফ পাঠান এখন তা বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকে ইউসুফের বহরমপুরমুখী না হওয়া নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছিলেন দলেরই ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সাংসদ হিসেবে ইউসুফের এলাকায় দ্রুত আসা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন।
সোমবার মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘আমরা যে কথা আগে বলেছিলাম সেই কথার বাস্তবের রূপ দিচ্ছেন ইউসুফ পাঠান। এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি গুজরাতের লোক বাংলায় খেপ খেলতে এসেছিলেন। খেপ খেলা শেষে তিনি গুজরাত ফিরেছেন। জনগণের দাবি নিয়ে তৃণমূলের নেতাদের ঘেরাও করে জানতে চাওয়া উচিত আমাদের সাংসদ কোথায়?’’ বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছিলাম এমনটা হবে। তাই বহরমপুরের ছেলে নির্মল সরকারকে চাই বলেছিলাম। কিন্তু মানুষ এক জন বহিরাগতকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছেন। ফলে যেমন হওয়ার তেমনই হয়েছে। তৃণমূলের কাছে জানতে চাই বহরমপুরের সাংসদ কোথায়?’’
তবে সোমবার বিকেলে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘সাংসদের এখানে বাড়ি নয়। তাঁর এটা কর্মভূমি। সাংসদ যেদিন জিতেছেন তার পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তুমি বাড়িতে গিয়ে দেখা কর। তখন তিনি পরিবারের সঙ্গে বাবা মায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। লোকসভার কিছু নিয়ম কানুন আছে, তার রেজিস্ট্রেশনের জন্য তাঁকে চলে যেতে হয়েছে। তার পরে লোকসভা বসেছে। গতকাল লোকসভা শেষ হয়েছে। আবার ২২ তারিখে লোকসভা আছে। আপনারা জানেন তিনি শুধু সাংসদ নন, তিনি বিশ্ববন্দিত খেলোয়ার। এই মূহূর্তে ইংল্যান্ডে ভারতীয় একাদশ এবং ইংল্যান্ড একাদশ খেলা চলছে। সেই খেলা শেষে তিনি এখানে ফিরে আসবেন। ২২ তারিখে সংসদে অংশগ্রহণ করবেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত কথা হয়। কোনও কাজ আছে কিনা, কীভাবে আগামীতে কাজ এগোবে সে সব বিষয়ে আমার সাথে কথা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের আগামী দিনের উন্নয়নের পরিকল্পনা নিচয়ে তিনি এগোবেন।’’
সাংসদ না থাকাতে কাজে কোনও অসুবিধা হবে না বলে অপূর্ব জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সাংসদের যে কাজ তা কারও কোনও জায়গায় অসুবিধা হবে না। শপথ নিয়ে সবে তাঁর সই করার ক্ষমতা এসেছে। সাংসদের বা বিধায়কের শংসাপত্রের জন্য এই জেলা কার্যালয় থেকে ব্যবস্থা করা হবে। বিভ্রান্তিতে কান দেবেন না, অপপ্রচারে কান দেবেন না। ব্লক সভাপতি আছে, শহর সভাপতি, চেয়ারম্যান, বিধায়ক আছে যাকে খুশি ফোন করবেন, দলীয় অফিসে আসবেন। না হলে আমাদের ফোন করবেন। সাংসদের জন্য আপনার কোনও কাজ আটতে থাকবে না।’’