—প্রতীকী চিত্র।
স্নাতক স্তরে প্রথম দফায় ভর্তির প্রক্রিয়া সদ্য শেষ হয়েছে। এখনও মুর্শিদাবাদ জেলার শহর ও মফস্সলের বহু কলেজে অনেক আসনই ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে খবর।
গত ১২ জুলাই উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকা প্রকাশিত হয়। ওইদিন থেকেই শুরু হয়েছিল ভর্তি প্রক্রিয়া। ১৯ জুলাই প্রথম দফায় ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বিভিন্ন কলেজে সূত্রে খবর, ভর্তির আবেদন বেশি জমা পড়লেও বিজ্ঞান (পিওর সায়েন্স), অর্থনীতির মতো বিষয়ে ভর্তির হার এ বছর অনেক কম। নামী কলেজগুলিতে ভর্তির হার কিছুটা বেশি হলেও মফস্সলে কোনও কলেজে ৫০ শতাংশ, কোথাও দুই-তৃতীয়াংশ আসনই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। শিক্ষকদের একাংশের মতে, শিক্ষকতা-সহ বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ুয়াদের একাংশ উচ্চ মাধ্যমিকের পাশের পর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক পেশার দিকে চলে যাচ্ছে। তাই সাধারণ বিষয়ে বহু আসন ফাঁকা থাকছে।
তা ছাড়া, অনেক পড়ুয়া ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। তাই গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা, অর্থনীতির মতো বিষয় নিয়ে পড়ার আগ্রহ কমেছে বলে মত শিক্ষকদের একাংশের। বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে মোট আসন সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। ওইকলেজে প্রথম দফায় ভর্তি হয়েছেন ১৫০১ জন। যা মোট আসনের প্রায় অর্ধেক। বিজ্ঞান, অর্থনীতির বেশ কিছু আসন এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ সুজাতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “এরপর দ্বিতীয় দফা ও মপ-আপ রাউন্ড রয়েছে। আশা করছি, আরও ছাত্রছাত্রী ভর্তি হবে।”
বহরমপুর গার্লস কলেজেও অর্থনীতি, বিজ্ঞান বিভাগের একাধিক বিষয়ে কিছু আসন ফাঁকা রয়েছে। ওই কলেজের ১৫৪০ আসনের মধ্যে ৭৯১ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছেন। ৭৪৯টি আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বহরমপুর কলেজে আসন সংখ্যা ৪,১১৪। সেখানে ভর্তি হয়েছেন ২,৭৮৭ জন ছাত্রছাত্রী। অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডলের দাবি, ভর্তি আশানুরূপই হয়েছে। হরিহরপাড়ার হাজি একে খান কলেজে মোট আসন সংখ্যা প্রায় ১,৮০০। ওই কলেজেও ভর্তি হয়েছে ৬৩১টি আসন। গত বছর ওই কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন প্রায় ৯৫০ জন ছাত্রছাত্রী। নওদার আমতলা যতীন্দ্র রাজেন্দ্র মহাবিদ্যালয়ে বাংলা, ইতিহাস, ইংরিজির মতো বিষয় নিয়ে অনেকে ভর্তি হলেও দর্শন, আরবি, সংস্কৃতের বহু আসন ফাঁকা রয়েছে।
ডোমকল গার্লস কলেজে দুই-তৃতীয়াংশ আসনই ফাঁকা রয়েছে। ভূগোল, শারীরশিক্ষা, সমাজবিজ্ঞান-সহ একাধিক বিষয়ে ভর্তির হার খুব কম বলে জানা গিয়েছে। এক কথায়, অধিকাংশ কলেজেই পড়ুয়াদের ভর্তির হার তুলনামূলক ভাবে কম। তবে ফাঁকা আসনের অধিকাংশ সংরক্ষিত আসন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। মুর্শিদাবাদের অনেক কলেজই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। স্নাতক স্তরে পাঠক্রমের সময় চার বছর। অনেক ছাত্রছাত্রী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন, অনেকে চাকরির পরীক্ষার দিকে ঝুঁকছেন। ভর্তির হার কমার সেগুলিও অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।