পাতে মাংস-ভাত। নিজস্ব চিত্র
স্কুলের মিডডে মিলের রান্নাঘরে চলছে মাংস রান্না। মাংস রান্নার ঘ্রাণ পৌঁছে যাচ্ছে ক্লাসরুমে। পড়ুয়ারাও উসখুস করছে টিফিনের ঘণ্টা পড়ার অপেক্ষায়। চার পিরিয়ড শেষে টিফিনের ঘণ্টা পড়তেই থালা হাতে মিডডেমিলের ডাইনিং হলে হাজির পড়ুয়ারা। এরপর ভাত, তরকারির পর পড়ুয়াদের পাতে পড়ল পোলট্রি মুরগির মাংস। আর তৃপ্তি করে তা চেটেপুটে খেল ছাত্রছাত্রীরা।
এভাবেই বুধবার পিকনিকের আবহ দেখা গেল নওদার সরযূবালা বিদ্যাপীঠে। বুধবার মিলডেমিলে দেওয়া হয়েছিল ভাত, আলু, বেগুন, মূলো, পালংশাকের তরকারি আর পোলট্রির মুরগির মাংস। বিভিন্ন সরকারি, সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষকেরা বলছেন বর্তমানে হরিহরপাড়া, নওদার মতো মফসসল এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরে মরসুমি আনাজের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। তাতে বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় হবে বলে মত শিক্ষকদের একাংশের। সাশ্রয় হওয়া টাকায় অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ সপ্তাহে একদিন পোলট্রি মুরগির মাংস খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নওদার সরযূবালা বিদ্যাপীঠে রয়েছে নিজস্ব কিচেন গার্ডেন। সেই বাগানে ফলেছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলো, পালংশাক সহ রকমারি মরসুমি আনাজ। ফলে আনাজের খরচ কম হয়েছে অনেকটাই। ফলে নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই পড়ুয়াদের পাতে মাংস দিতে সক্ষম হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বিশ্বাস বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের মিডডে মিলের চার্ট অনুযায়ী প্রতিদিন রান্না হয়। যেহেতু স্কুলের আনাজ বাগানে মরসুমি আনাজ ফলেছে। বাজারে আনাজের দামও তুলনামূলক ভাবে কম আছে তাই সপ্তাহে একদিন মাংস খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
মফসসলের বাজারে পোলট্রি মুরগির মাংস ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও পাইকারি হিসেবে এদিন ১৬৫ টাকা কেজি দরে মাংস কিনেছেন ওই স্কুলের শিক্ষকেরা। এদিন মাংস রান্না হবে জেনে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল বেশি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সাড়ে আটশো পড়ুয়ার মধ্যে বুধবার স্কুলে এসেছিল ৭৬৯ জন পড়ুয়া। তারা প্রত্যেকেই মিডডে মিল খেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সুপ্রিয়া দাস বলে, ‘‘বাড়িতে মাংস হলে এতটা আনন্দ হয় না। কিন্তু আজ মনে হচ্ছিল টিফিন পিরিয়ড কখন হবে, কখন মাংস ভাত খাব।’’ মিডডে মিলের রাঁধুনি মিঠু মণ্ডল, সাদানা বিবিরা বলছেন, ‘‘চার পিস করে মাংস দেওয়া হয়েছিল। অনেকে পরে ভাত, মাংসের ঝোল চেয়ে নিয়েছে।’’