মিড ডে মিলে তিনটি ডিম। — ফাইল চিত্র।
নাগালে শীতকালীন আনাজ। স্বস্তি দিয়েছে আমজনতার হেঁশেলে। রকমারি আনাজ পড়ছে মিডডে মিলের পাতেও।
বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা বলছেন, সপ্তাহের কোন দিন পড়ুয়াদের কী খাওয়ানো হবে সেই মেনু ঠিক করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রতিদিন তিন ধরনের মেনু তালিকার যে কোনও একটি খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। চলতি মাস থেকে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত সপ্তাহে তিন দিন পড়ুয়াদের পাতে ডিম দেওয়ারও নির্দেশিকা দিয়েছে প্রশাসন ও শিক্ষা দফতর।
শীতকালীন আনাজের দাম নাগালে থাকায় সপ্তাহে এক দিন পড়ুয়াদের পোলট্রি মুরগির মাংস খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলার বহু স্কুল।
হরিহরপাড়া, নওদা সহ জেলার বিভিন্ন হাটে-বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে খুচরো ১৫ টাকা কেজি, পাইকারি ১০-১২ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপি পাঁচ টাকা দামে খুচরো বিক্রি হলেও তা পাইকারি আড়াই-তিন টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। সিম, মুলো, পালংশাক, গাজরও রয়েছে নাগালের মধ্যে।উল্লেখ্য, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অর্থাৎ প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের মিডডে মিলের জন্য বরাদ্দ রয়েছে পাঁচ টাকা ৪৫ পয়সা। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি অর্থাৎ প্রাক প্রাথমিক পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে আট টাকা ১৭ পয়সা। চলতি মাস থেকে সপ্তাহে প্রতি সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার পড়ুয়াদের পাতে দেওয়া হবে ডিমও।
তার জন্য ডিম বাবদ অতিরিক্ত সাত টাকা বরাদ্দ হয়েছে চলতি মাস থেকে। সোমবার থেকে বিভিন্ন সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলে চালু হয়েছে পঠনপাঠন, চালু হয়েছে মিড ডে মিলও। জেলা প্রশাসনের নির্দেশিকা অনুযায়ী সোমবার মিড ডে মিলের মেনু ছিল ভাত, ডাল, ডিম আলুর তরকারি অথবা ভাত, তরকারি, ডাল, সয়াবিন তরকারি অথবা তরকারি-খিচুড়ি, সেদ্ধ ডিম। হরিহরপাড়া হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে প্রতিদিন গড়ে ১২৫০-১৩০০ ছাত্রছাত্রী মিড ডে মিল খায়। ওই স্কুল জেলা প্রশাসনের আহারের তিন নম্বর পদ বা মেনু মেনে চলে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার শাসমল বলেন, ‘‘শীতকালীন আনাজ নাগালের মধ্যে রয়েছে। বেশি পরিমাণে আনাজ কেনায় পাইকারি দামে পাওয়া যায়। ফলে কিছুটা সাশ্রয় হবে। ডিমের জন্য আলাদা বরাদ্দ রয়েছে। পোলট্রি মুরগির মাংসের দামও নাগালের মধ্যে রয়েছে। ফলে সপ্তাহে একদিন পড়ুয়াদের পোলট্রি মুরগির মাংস খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ নওদার বালি গান্ধী মেমোরিয়াল হাইস্কুলে সোমবার পড়ুয়াদের ভাত, ডাল, আলু, কুমড়োর তরকারি ও ডিম দেওয়া হয়েছিল। নওদার সরযূবালা বিদ্যাপীঠের পড়ুয়াদের সোমবার ভাত, তরকারি, ডাল, ডিম দেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বিশ্বাস বলেন, ‘‘মরসুমি আনাজের দাম সস্তা। স্কুলের আনাজ বাগানেও ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলো সহ অন্যান্য আনাজ মিড ডে মিলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে যে টাকা সাশ্রয় হবে তা দিয়ে সপ্তাহে একদিন পোলট্রি মুরগির মাংস খাওয়ানোর ভাবনা রয়েছে।’’ বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরাও পড়ুয়াদের মিডডেমিলে শীতকালীন মরসুমি আনাজ ব্যবহার করছেন। অধিকাংশ স্কুলই সপ্তাহে একদিন পোলট্রি মুরগির মাংস খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হরিহরপাড়ার বিডিও রাজা ভৌমিক বলেন, ‘‘মরসুমি আনাজ মিডডে মিলের মান বাড়িয়েছে। তার সঙ্গে সপ্তাহে তিন দিন ডিম, অনেক স্কুল সপ্তাহে একদিন মুরগির মাংস খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা খুব ভাল ব্যাপার।’’