একশো দিনের কাজ। ফাইল চিত্র।
ক্রমশ নেমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ জলস্তর। দেখা দিতে শুরু করেছে জলের সঙ্কট। এই পরিস্থিতিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে কাজে লাগানোর অভিনব পরিকল্পনা করল নদিয়া জেলা প্রশাসন। বৃষ্টির জলকে ভূগর্ভ পর্যন্ত নামিয়ে দিতে তৈরি করা হচ্ছে এক লক্ষ ‘পারকোলেশন পিট’। আস্তে আস্তে সংখ্যাটা আরও কয়েক গুণ বাড়ানো হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে পরিবেশ বান্ধব হিসাবে ব্যবহার করা হবে। সেখানে যেমন বৃক্ষরোপণ করা হবে, তেমনই খনন করা হবে পুকুর। কিন্তু এ সবের পাশাপাশি জেলা জুড়ে তৈরি করা হবে এই বিশেষ ধরনের গর্ত, যাতে বৃষ্টির জল সরাসরি মাটির নীচে চলে যেতে পারে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “আজ সর্বত্র মাটির নীচের জলস্তর নিমে যাচ্ছে। প্রবল জলের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। আমরা চাইছি যে, আমাদের জেলায় যেন এই সঙ্কট কোনও ভাবেই প্রকট না হয়। সেই কারণেই এই উদ্যোগ।” এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের কর্তারা বিডিওদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাঁদেরকে দ্রুত কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জবকার্ড হোল্ডারদের বাড়িতে এই বিশেষ ধরনের গর্ত করে দেওয়া হবে। সেই বাড়ির মালিক গর্তটি তৈরির জন্য আট দিনের শ্রম দিবস পাবেন। তিনি যদি একা গর্ত তৈরি করেন তা হলে সেই টাকা তিনি একা পাবেন। আর যদি অন্য কোনও জবকার্ড হোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করেন, তা হলে তাঁরা শ্রম দিবসের মজুরি পাবেন। গর্তটি হবে আট ফুট গভীর, দৈর্ঘ্য ৬ ফুট ও প্রস্থ হবে চার ফুট। একেবারে নীচে থাকবে ঝামা ইটের বড় বড় টুকরো, তার উপরে থাকবে ঝামা ইটের ছোট ছোট টুকরো। তার উপরে থাকবে মোটা দানার বালি। উপরে এক ফুট ফাঁকা থাকবে। আর সেই এক ফুটের চারপাশ ইট-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টির জল সেই পিটে এসে জমা হবে। সেখান থেকে সরাসরি চলে যাবে মাটির নীচে। প্রাথমিক ভাবে এক লক্ষ ‘পিট’ করা হবে। পরে আস্তে আস্তে সংখ্যাটা আরও বাড়ানো হবে। জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলছেন, “ভূগর্ভস্থ জলস্তর ক্রমশ কমে যাচ্ছে। আমরা সেই কারণেই উদ্যোগী হয়েছি, যাতে বৃষ্টির জল মাটির নীচে যায়।”