তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রতীকী চিত্র।
ভুল নম্বরে ফোন করায় এক যুবককে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সেই অপমানে যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ পরিবারের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়়াল নদিয়ার নবদ্বীপের চর স্বরূপগঞ্জ এলাকায়। মৃতের নাম অমিত দেবনাথ (২৪)।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার সন্ধ্যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, চর স্বরূপগঞ্জের সুকান্ত পল্লি এলাকার বাসিন্দা অমিত বন্ধুকে ফোন করতে গিয়ে ওই এলাকারই এক মহিলাকে ফোন করেন। তাঁর পরিবারের দাবি, ভুলবশত ওই ফোন করেন তিনি। এর জেরেই ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সঞ্জীব সমাদ্দার ওরফে কালু ফোন করে অমিতকে ডেকে পাঠান স্থানীয় তৃণমূল কার্যালয়ে। সেখানে পৌঁছনো মাত্রই যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এর পর রবিবার সকালে আবারও তাঁকে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়।
সেখান থেকে বাড়ি ফিরে রবিবার দুপুরে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন অমিত। অভিযোগ, এর পরই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। পুলিশকে জানানোর পর ঘটনাস্থলে আসতেই তারা আড়াই ঘন্টা দেরি করে বলে অভিযোগ। মৃতের দাদা সুশীল দেবনাথ বলেন, ‘‘প্রথম দিন মারধরের পরের দিন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। তার পর ভাই আত্মহত্যা করে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য সঞ্জীব সমাদ্দার দায়ী।’’
অন্য দিকে, অভিযুক্ত সঞ্জীবের বাড়িতে ক্ষিপ্ত জনতা ভাঙচুর চালায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এই সঞ্জীব তাঁর দলবল নিয়ে এলাকায় ‘দুষ্কৃতীরাজ’ চালাচ্ছেন। যদিও সঞ্জীব তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে।
এই ঘটনায় নবদ্বীপের বিধায়ক পুন্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, ‘‘এ ধরনের কোন অভিযোগ শুনিনি। তবে দল হিসাবে তৃণমূল এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়... এটা দায়িত্ব নিয়ে বলছি।’’
নদিয়া উত্তরের বিজেপি সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যজুড়ে তৃণমূল সংগঠিত ভাবে বেলাগাম সন্ত্রাস চালাচ্ছে। এটা তার নমুনা মাত্র। আইনকে নিজেদের মতো করে পরিচালনা করার স্পর্ধা দেখাচ্ছে তৃণমূল। এর জন্য দায়ী পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা।
পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে নদিয়া জেলা পুলিশ। কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ঈশানী পাল জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে তারা। যদিও সোমবার এই ঘটনায় নবদ্বীপ কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গিয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।