— প্রতীকী চিত্র।
ধর্ষণের অভিযোগ করার পরেও পুলিশ পদক্ষেপ করেনি। এমনই অভিযোগ এনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দের দ্বারস্থ হলেন নদিয়ার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত এক পড়ুয়া। নির্যাতিতার আঙুল যে অধ্যাপকের অধীনে তিনি গবেষণা করছেন, তাঁর দিকে। অভিযোগ, বার বার তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন ওই অধ্যাপক। অন্য দিকে, অভিযুক্ত অধ্যাপকের দাবি, ‘‘দু’বছরের পুরনো অভিযোগকে সুযোগ বুঝে আবার ভাসিয়ে দিচ্ছেন ওই ছাত্রী।’’ অধ্যাপকের এ-ও দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অন্য দিকে, আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ওই ছাত্রীর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০২২ সালে কল্যাণী থানায় এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর অধীনে গবেষণারত এক ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এখন ওই ছাত্রীর দাবি, তাঁর অভিযোগকে কোনও গুরুত্বই দেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ। উল্টে এমন গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অভিযুক্ত অধ্যাপকের পদোন্নতি হয়েছে। তিনি এখন বিভাগীয় প্রধান। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলেরও সদস্যও বটে। ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘আমি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেই ভয় পাই। আতঙ্কে আছি। ভাবতে কষ্ট হচ্ছে, সুবিচার পেলাম না।’’ আরজি কর-কাণ্ডের প্রসঙ্গ এনে তিনি আরও বলেন, ‘‘নতুন করে সাহস পেয়ে আবার অভিযোগ করছি।’’ তিনি জানান, ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালে। তখন তিনি সদ্য পিএইচডি শুরু করেছেন। যাঁর অধীনে তিনি গবেষণা করেছেন, তিনি একাধিক বার যৌন নির্যাতন করেছেন তাঁকে। ‘নির্যাতিতা’ এ-ও দাবি করেছেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করেছিলেন। তাতে সাসপেন্ডও হন ওই অধ্যাপক। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে সাসপেন্ড আটকে আরও ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন অভিযুক্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে খবর, ওই অধ্যাপক সংশ্লিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। তিনি তৎকালীন তদন্ত কমিটির মান্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা করেছিলেন। ওই অধ্যাপকের কথায়, ‘‘কলকাতা হাই কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন তদন্ত কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এখন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে। আমি ভয় পাচ্ছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজনৈতিক চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। গোটা বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এর থেকে বেশি কিছু মন্তব্য করব না।