—প্রতীকী চিত্র।
মধ্যরাতে ছেলের গোঙানি শুনে ঘুম থেকে উঠে বসেছিলেন মা-বাবা। তবে শ্বশুর-শাশুড়িকে ‘সব ঠিক আছে’ বলে আশ্বস্ত করে ঘুমোতে যেতে বলেন বৌমা। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাড়ির পিছনের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হল যুবকের দেহ। এ নিয়ে উত্তেজনা নদিয়ার করিমপুরের রামনগর এলাকায়। মৃতের পরিবার এবং প্রতিবেশীদের অভিযোগ, স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছেন যুবক। আর তাতে সঙ্গ দিয়েছেন স্ত্রী।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম অনুপ মণ্ডল। ৩৫ বছরের অনুপের বছর ১৪ আগে প্রথম বিয়ে হয়। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে। কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বার বিয়ে করেন অনুপ। সেটা বছরখানেক আগে। দ্বিতীয় স্ত্রী বিবাহবিচ্ছিন্না ছিলেন। এখন পরিবারের অভিযোগ, অনুপের স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম পক্ষের স্বামী এবং এক আত্মীয়ের আবার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এ নিয়ে অশান্তিও হয়েছে। কোনও ‘এক প্রেমিকের’ পরামর্শে ওই বধূ স্বামীকে খুনের পরিকল্পনা করেন বলে অভিযোগ। মৃতের পরিবারের সন্দেহ, ওই খুনের ব্যাপারে সহযোগিতা করেন বধূর প্রাক্তন স্বামী।
সোমবার মধ্যরাতে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিক সেরে বাড়ি ফেরেন অনুপ। মাঝরাতে গোঙানির শব্দ শুনতে পান অনুপের মা-বাবা। ছেলের গলা মনে করে তাঁরা তাঁর ঘরের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু দরজা আগলে বৌমা জানান, কিছু হয়নি। পরে অনুপের নিথর দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির পিছনে একটি জঙ্গল থেকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্বাসরোধ করে খুন করে জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছে অনুপকে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই খবর পৌঁছোয় করিমপুর থানায়। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পাঠায় তারা। ঘটনাস্থলে অরূপের স্ত্রীর ‘প্রেমিকের’ উপস্থিতি রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। যদিও কিছু ক্ষণের মধ্যেই গা ঢাকা দেন ওই ব্যক্তি।
মৃতের এক আত্মীয় সুমন মণ্ডল বলেন, ‘‘বৌদির সঙ্গে ওর এক জামাইবাবুর সম্পর্ক ছিল। দাদা যে মারা গিয়েছে, এটা প্রথম আমাদের জানায় ওই জামাইবাবু। বৌদির প্রাক্তন স্বামী এবং ওই জামাইবাবু মিলেই দাদাকে খুন করেছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’ যদিও এখনও এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হননি। তেহট্ট থানার মহকুমা পুলিশ অধিকারিক শুভতোষ সরকার বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার রুজু করা হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের হবে।’’