বেহাল রাস্তা। কল্যাণীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
শহরের মূল রাস্তাগুলোর হাল মোটের উপর ভাল। সেন্ট্রাল পার্ক থেকে মেন স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তায় সামান্য পাথর উঠে গেলে পুরসভা দ্রুত সংস্কার করে। ভোটের মুখে শহরের একাধিক প্রধান রাস্তায় ব্যাপক সংস্কারও হচ্ছে। কিন্তু মূল রাস্তাগুলো থেকে যতই গলির দিকে ঢোকা যায় ততই বেরিয়ে পড়ে রাস্তার কঙ্কালসার দশা। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে পুরবাসীদের একাংশের। কল্যাণীর মতো পরিকল্পিত শহরের ওয়ার্ডগুলির ভেতরের রাস্তার এমন হাল নিয়ে বিরোধীরা সরব হতে পারে জেলার রাজনৈতিক মহলের ধারণা। যদিও পুরসভার দাবি, শহরের কোনও রাস্তা সে ভাবে খারাপ নয়।
রেললাইনের ওপারে কল্যাণীর বেশ কিছু ওয়ার্ড রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, তাঁদের ওয়ার্ডের সঙ্গে মূল শহরের ওয়ার্ডগুলির ফারাক অনেক। অলিগলির রাস্তা বেহাল। শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফার্ম মোড় থেকে ভুট্টাবাজারে যাওয়ার রাস্তার বেশির ভাগ জায়গায় খোয়া বেরিয়ে পড়েছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে, তৈরির পর থেকেই পর্যাপ্ত সংস্কার হয়নি। ওই রাস্তা বছর দুয়েক আগে তৈরি হয়। এত অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তার কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ায় রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন অনেকের। ওই রাস্তাতেই রয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফার্ম। এ ছাড়াও ওই রাস্তায় অবস্থিত পাহাড়িপাড়া ও ভুট্টাবাজার এলাকা ঘনজনবসতিপূর্ণ। প্রতিদিন বহু মানুষকে ওই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়াও আমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে চিত্তরঞ্জন পার্কের মোড়ের দিকে যাওয়ার গলির ভিতরের একশো মিটার রাস্তার অবস্থাও বেশ খারাপ বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অভিজিৎ শীল বলছেন, ‘‘ওই রাস্তার পাথর বেরিয়ে গিয়েছে। দিন কয়েক আগেই ওই পাথরের কারণে মোটরবাইক পিছলে পড়ে যাই। আসলে পুরসভা কেবল উপরে উপরে মূল ও দীর্ঘ রাস্তাগুলিরই কাজ করে। এমনটা হওয়া উচিত নয়।’’
পুরবাসীদের একাংশ জানান, ৯ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে যৌগিক ক্লাবের দিকে যাওয়ার রাস্তাও খুব খারাপ। বেহাল দশা পিকনিক গার্ডেন থেকে সেন্ট্রাল পার্কে যাওয়ার ২৭ নম্বর বাসের রুটের রাস্তারও। ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপরে বেশ কয়েকটি বাসস্ট্যান্ড রয়েছে। এ ছাড়াও শহরের সেন্ট্রাল পার্কের লোকজন সীমান্ত বা পিকনিক গার্ডেনে যাওয়ার জন্য ওই রাস্তা ব্যবহার করেন। কিন্তু ওই রাস্তার একাধিক জায়গায় চলাচলের একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শহরের ৩ নম্বর খেলার মাঠ থেকে বি-৫ এর দিকে যাওয়ার রাস্তাও অনেক দিন ধরেই খারাপ।
শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দিলীপ কুমার বলছেন, ‘‘বুদ্ধপার্কের খরগোসের খামারের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটা কল্যাণী-ব্যারাকপুর এক্সপ্রেসওয়েতে গিয়ে মিশেছে সেটি দেখে মনে হয় পাহাড়ের কোনও চড়াই উতরাই পথ। আর ভাঙা ওই রাস্তা দিয়েই বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হয়।’’ শহরের বীরপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দিকে যেতে ৬ নম্বর রেলগেট পেরোতেই হয়। তার পর ওই রাস্তা গিয়ে ওই তালতলায়। স্থানীয়দের একাংশ জানান, বেশ কয়েক কিলোমিটার ওই রাস্তার সিংহভাগই ভাঙাচোরা। অথচ চরবীরপাড়া-সহ বহু এলাকার মানুষ মূল শহরের আসতে গেলে ওই রাস্তাকেই ব্যবহার করেন। এ ছাড়াও কাঠালতলা বাজারের কাছেও একটি রাস্তায় নর্দমার জল উঠে যায়। ফলে সেখানকার রাস্তাও অগম্য হয়ে পড়ে। যদিও তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত কল্যাণী পুরসভার চেয়ারম্যান সুশীলকুমার তালুকদারের দাবি, শহরের কোনও রাস্তাই সে ভাবে খারাপ নয়।