অবরোধে নেতানেত্রীরাও। নিজস্ব চিত্র
তিন দিন ধরে ট্রাক মালিকেরা তোলাবাজির প্রতিবাদে অবরোধ করে রেখেছেন ঝাড়খণ্ডের কোটালপুকুর -ফরাক্কা সড়ক পথ। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বেহাল রাস্তা সংস্কারের পরে গত ১০ অগস্ট থেকে ঝাঁ চকচকে ওই সড়ক চালু করা হয়েছে। তার পরে জেলা পরিষদ টোল ট্যাক্স নেওয়া শুরু করেছে সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে। ট্রাক মালিকদের অভিযোগ, সেখানে টোল যত টাকা করে ধার্য রয়েছে, তার চেয়ে বেশি টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। সেই কারণেই তাঁরা ট্রাক চলাচল বন্ধ করে অবরোধে বসেছেন। তবে জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, টোলের নামে অতিরিক্ত টাকা যে নেওয়া হচ্ছে, তা তিনি জানেন না।
ট্রাক মালিক সংগঠনের কর্তা নারায়ণ সাহার পরিষ্কার অভিযোগ, ‘‘মাল বোঝাই ট্রাকের জন্য টোল ১৪০ টাকা। অতিরিক্ত ওজন থাকলে ২৮০ টাকা রসিদ সহ আদায় করার কথা। খালি লরির জন্য ৫০ টাকা। কিন্তু সেই নিয়ম না মেনে টোল ট্যাক্স হিসেবেই কোনও কোনও ট্রাকের কাছ থেকে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।’’
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। আমরা দেখছি কী করা যায়।’’ শনিবার অবরোধ পরিস্থিতি দেখতে ঘটনাস্থলে যান ফরাক্কা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আঞ্জুম আরা খাতুন ও কর্মাধ্যক্ষরা। আঞ্জুম বলেন, ‘‘টোলের নাম করে বেআইনি টাকা তোলা হচ্ছে। মস্তানরাও টাকা নিচ্ছিল। এ সব বন্ধ হওয়া দরকার।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘আমি জানি ফরাক্কার সড়ক অবরোধের কথা। কিন্তু ধার্য টোলের চেয়ে বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে ট্রাক মালিকেরা আমাকে কিছুই জানাননি। বরং শুনেছি ওই রাস্তার মস্তানরা বেআইনি ভাবে জোর করে ট্রাক থেকে তোলা তুলছে। তার প্রতিবাদেই রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে ট্রাক মালিকেরা।’’
ট্রাক মালিকেরা জানাচ্ছেন, টোল বসার আগেই রাস্তা চালু হওয়ার পরে শ্যামলাপুর গ্রামের কাছে শুরু হয়েছিল স্থানীয় মস্তানদের তোলাবাজিও। ট্রাক প্রতি ৭০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে সেখানে। না দিলেই মারধোর করা হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনকে জানিয়েও কোন ফল হয়নি। এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মস্তানদের তোলাবাজি বৃহস্পতিবার থেকেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’
ট্রাক মালিকদের এই অবরোধে তিন দিন থেকে বিচ্ছিন্ন ফরাক্কা- ঝাড়খণ্ড যোগাযোগ। রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে শতাধিক মাল বোঝাই ট্রাক। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে এই অবরোধ চলছে শনিবারেও তৃণমূলের ঝাণ্ডাকে সামনে রেখে। ট্রাক মালিক তারিফ হোসেন বলছেন, ‘‘অতিষ্ঠ হয়েই আমরা লরি মালিকেরা এই সড়ক অবরোধ করে রেখেছি।’’